রাণীনগর প্রতিনিধি, নওগাঁ
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের সর্বরামপুর গ্রামে রতনডারি খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণের জন্য বরাদ্দ হয় ১৮ লাখ টাকা। বরাদ্দের তিন বছর পরও দুটি পিলার ছাড়া ব্রিজ দেখছেন না এলাকাবাসী। রহস্যজনক কারণে প্রায় তিন বছর ধরে বন্ধ রয়েছে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ।
গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, এলাকার জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে বরাদ্দ সাপেক্ষে ২০১৬ সালে ব্রিজ নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়। দুটি পিলার নির্মাণের পর রহস্যজনকভাবেই বন্ধ হয়ে যায় ব্রিজের নির্মাণকাজ। নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় ওই এলাকার দুইটি ইউনিয়নের প্রায় ২০টি গ্রামের বসবাসরত সাধারণ মানুষসহ স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রীদের খাল পাড় হতে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। তবে শুষ্ক মৌসুমে পায়ে হেঁটে চলাচল করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে খালে পানি পরিপূর্ণ হলে বাঁশের সাঁকো ও পারিবারিক ডিঙ্গি নৌকা হয়ে ওঠে একমাত্র।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলার সদর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণে কাশিমপুর-গোনা ইউনিয়নের সীমান্ত ঘেঁষে বুক চিড়ে বয়ে গেছে রতনডারি খাল। ১৯১৪ সালে কৃষি জমিতে সেচ ব্যবস্থা ও নৌ চলাচলের স্বাভাবিক গতি ধরে রাখার জন্য ও খালের পানির প্রবাহ সচল রাখার লক্ষ্যে রাণীনগর স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী উদ্যোগে কুজাইল স্লুইস গেট থেকে হাতিরপুল হয়ে রক্তদহ বিল পর্যন্ত খাল খনন করা হয়। ফলে এই খালে পানির প্রবাহও বৃদ্ধি পায়। বন্যা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে বছরের বেশি সময় ধরে বন্যার পানি এই খালে থৈ থৈ করে। ফলে ওই এলাকার ২০টি গ্রামের মানুষদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।
তাই এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ছিল, সর্বরামপুর-ভবানীপুর চৌতাপাড়ায় একটি ব্রিজ নির্মাণ করা। স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে রাণীনগর উপজেলা পরিষদের রাজস্ব উন্নয়ন তহবিল থেকে প্রায় ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে কাশিমপুর ইউনিয়নের সর্বরামপুর গ্রাম সংলগ্ন রতনডারি সাধখালি খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণের জন্য ২০১৬ সালের মার্চ মাসে একটি দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র আহ্বানের পর দাপ্তরিক সকল প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ শেষে নওগাঁ সদরের পার-নওগাঁ মহল্লার মো. গোলাম কিবরিয়া নামের এক ঠিকাদার নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায়। সেই মোতাবেক শুষ্ক মৌসুমে ওই খালের দুই পাড়ে পিলার নির্মাণের পর রহস্যজনক কারণে কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। তিন বছরেও ব্রিজটি নির্মাণে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করায় এলাকাবাসীর মাঝে প্রশ্ন উঠেছে কবে শেষ হবে এর নির্মাণ কাজ।
উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মকলেছুর রহমান বাবু জানান, জনগণের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে ২০১৬ সালে সাড়ে ১৮ লাখ টাকা উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন তহবিল থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেই মোতাবেক কিছু কাজ হলেও বাকি কাজ দীর্ঘ তিন বছর যাবত বন্ধ রয়েছে। নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য আমি বার বার সংশ্লিষ্টদের কাছে ধারণা দিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত ব্রিজের বাকি কাজগুলো শুরু না হওয়ায় আংশিক অবকাঠামোও ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে। অতি শীঘ্রই এই ব্রিজ নির্মাণ করার দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাইদুল ইসলাম মিয়া বলেন, ফুট ব্রিজটি নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করা একান্ত জরুরি। এই ব্রিজের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করতে এখনও প্রায় ২৫ লাখ টাকা লাগবে। উপজেলা পরিষদের তহবিলে এই পরিমাণ টাকা না থাকায় ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। তাই অন্য কোনো তহবিল থেকে প্রকল্প গ্রহণ করে কাজ সম্পূর্ণ করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।
ওডি/আইএইচএন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড