ইয়ার হোসেন, ঝিকরগাছা, যশোর
যশোরে ঝিকরগাছা উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেহাল দশা। উক্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৯২টি পদের মধ্যে ৪১টি পদই শূন্য রয়েছে। ফলে সেখানকার চিকিৎসা সেবাই তীব্র ভোগান্তি লক্ষ্য করা গেছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ডাক্তার নেই, নার্স নেই, কর্মকর্তা-কর্মচারী নেই, অফিস সহায়ক নেই, শুধু নেই আর নেই।
সরেজমিনে ঝিকরগাছা হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে এর বেহাল দশা। জরুরি বিভাগ ছাড়াই প্রতিদিন ৩৫০ থেকে ৪০০ রোগী দেখতে হচ্ছে সেখানকার চিকিৎসকদের। কিন্তু প্রয়োজনীয় চিকিৎসক না থাকায় রোগী দেখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তব্যরতদের। প্রতিটি চিকিৎসকের কক্ষের সামনে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
এছাড়া উক্ত ৫০ শয্যা হাসপাতালে ১১ জন ডাক্তারের স্থলে মাত্র ৭ জন আছেন। বর্তমানে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও), জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন), জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) এ চারটি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে।
এছাড়া নার্সিং সুপারভাইজার ১টি, সিনিয়র স্টাফ নার্স ১টি, পুষ্টিবিদ ১টি, ক্যাশিয়ার ১টি, অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক ২টি, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ডেন্টাল) ১টি, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ফার্মাসিস্ট) ২টি, স্টোর কিপার ১টি, সহকারী সেবক (সেবিকা নার্স) ১টি, স্যাকমো ১টি, স্বাস্থ্য পরিদর্শক ৩টি, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ৪টি, স্বাস্থ্য সহকারী ১৭টি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে।
ইতোমধ্যে জুনিয়র কনসালটেন্ট (এ্যানেসথেসিয়া), সহকারী-কাম-হিসাব রক্ষক এ দুই জনের বদলি অর্ডার হলেও উক্ত পদে লোক না থাকার কারণে তাদেরকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি বলে হাসপাতালে কর্মরত পরিসংখ্যানবিদ মাহাবুবুল হক জানিয়েছেন।
সব মিলে হাসপাতালের জনবল ৯২ জনের মধ্যে আছে ৫১ জন। চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ১৯ জনের মধ্যে আছে ১১ জন। ফলে ঝিকরগাছায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। সে কারণে সাধারণ রোগীরা হাসপাতাল থেকে মুখ ফিরিয়ে বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছে।
ফলে গরিব অসহায়, প্রতিবন্ধী রোগীরা অর্থাভাবে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ঝিকরগাছা হাসপাতালের ডাক্তারসহ জনবল কম থাকায় স্বাস্থ্য সেবা দিতে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা হিমশিম খাচ্ছে।সরেজমিনে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ৪ শতাধিক রোগী হাসপাতালে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিয়েছেন।
যত কঠিন রোগ হোক না কেন হসপিটালে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তার চিকিৎসা দিচ্ছে। বেগতিক এই অবস্থা দেখবারও লোক নেই। চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার হাড়িয়দেয়াড়া গ্রামের গুলজান বিবি (৫৫) বলেন ডাক্তার কম থাকায় দুই ঘণ্টা ধরে লাইনে দাড়িয়ে তারপর সিরিয়াল পেয়েছি।
এ ব্যাপারে ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পারবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শরিফুল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, বর্তমানে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান অনেক ভাল। সে কারণে রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ফলে জনবল কম থাকায় সাময়িক অসুবিধার মধ্যে রয়েছি, অচিরেই এ অবস্থা থেকে ফিরে আসব। ডাক্তার কম থাকায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় একশরও বেশি রোগীর চিকিৎসা দিতে হয় বলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
এভাবে চলছে ঝিকরগাছা হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা। অচিরেই ঝিকরগাছা হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসা পাওয়ার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
ওডি/আরবি
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড