ভৈরব প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ
ভৈরবে গত ৩০ মে কিশোর রূপক হত্যার ঘটনাটি জানার পর রাতেই ভবন মালিক আবু বকর সিদ্দিক ও তার ছেলে শাহ সুফিয়ান দুজন মিলে লাশ গুম করতে চেয়েছিল। রাতের অন্ধকারে বাসার ছাদের রক্ত সুফিয়ান কিশোরদের নিয়ে পরিষ্কার করেছে দাবি নিহত রূপকের বাবা নূরে আলম বিপ্লবের। রাতে লাশ গুম করার কোনো সুযোগ না পেয়ে তারা লাশ বস্তায় ভরে রাখে।
সকালে নিহত কিশোরের বাবা এবং তার পরিবারের লোকজনের চাপে পড়ে এবং পুলিশ জেনে ফেললে বিপদ হতে পারে ভেবে অবশেষে ভবন মালিক আবু বকর সিদ্দিক নিজেই ঘটনা প্রকাশ করেন। একই সাথে তিনি নিজেকে বাঁচাতে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ৩ জনকে ধরিয়ে দেয়। থানায় মামলা দায়েরের পর নিহত রূপকের বাবা এসব জানতে পেরেছেন বলে দাবি করেন তিনি।
শনিবার (১৫ জুন) বিকালে নিহত কিশোর ফারদিন আলম রূপকের বাবা নূরে আলম বিপ্লব স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে এসব অভিযোগ করেছেন।
এ সময় তিনি আরও অভিযোগ করেন, তার ছেলেকে হত্যার মূল নায়ক আবু বকর সিদ্দিকের নাতি রবিউল আওয়াল রাব্বি। সে তার দুই বন্ধু মাহিন ও পিয়ালকে ডেকে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে ঘটনার দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে রূপককে ওই ভবনের ছাদে নিয়ে যায়। ছাদে গেলে রূপকের সন্দেহ হলে প্রতিবাদ করায় ঘাতক তিন বন্ধু মিলে গলা কেটে হত্যা করে বলে অভিযোগ করেন তিনি। পরে তারা লাশ গুমের চেষ্টা করে।
এছাড়াও নিহত রূপকের স্বজনদের অভিযোগ গলা কাটা বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। কিন্তু জবাই করা স্থানে রক্তের সামান্য আলামত রয়েছে। কে বা কারা ছাদটিকে ধুয়ে মুছে পরিষ্কারের চেষ্টা করেছে? তাদের ধারণা তিন জনের সাথে আরও লোকজন জড়িত রয়েছে।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ভবন মালিক আবু বকর সিদ্দিক। তার দাবি হত্যার বিষয়টি রাতে তিনি জানতেন না। সকালে জানার পর কৌশলে তিন হত্যাকারীকে রুমে আটক করে পুলিশকে খবর দিয়ে তিনি ধরিয়ে দিয়েছেন।
জানা গেছে, শহরের আইডিয়াল স্কুলের পেছনে গত ৩০ মে রাত সাড়ে ৮টায় আবু বকর সিদ্দিকের ৬ তলা ভবনের ছাদে তিন বন্ধু মিলে রূপককে হত্যা করে লাশ বস্তায় ভরে রাখে। রাতে ছেলে বাসায় না ফেরায় তার বাবা নূরে আলম বিপ্লব ভৈরব থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
পরদিন ৩১ মে শুক্রবার সকালে ঘটনা ফাঁস হলে পুলিশ ৬ তলা ভবনের ছাদ থেকে বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে। একই সাথে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহত রূপকের ৩ বন্ধু রাব্বি, মাহিন ও পিয়ালকে আটক করে।
এ ঘটনায় নিহত রূপকের বাবা নূরে আলম বিপ্লব বাদী হয়ে ৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনায় পরে ভবন মালিকের ছেলে শাহ সুফিয়ান ও ভাড়াটিয়া ইয়ারফাত পাটোয়ারীকে র্যাব আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এদিকে তিন কিশোর বন্ধু কিশোরগঞ্জ আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যার কথা স্বীকার করে।
এ প্রসঙ্গে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোখলেছুর রহমান জানান, বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতে এজাহার নেওয়া হয়েছে। তারপরও যদি আরও কোনো নতুন তথ্য পাওয়া যায় তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া পুলিশ মামলাটি গভীরভাবে তদন্ত করছে। আশা করি হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত কেউ রেহাই পাবে না।
ওডি/আরবি
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড