শার্শা প্রতিনিধি, যশোর
শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ডে প্রত্যাহার হওয়া সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনে যেন পালাতে না পারে, সেজন্য বেনাপোল সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ওসি আবুল বাশার বলেন, মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর পুলিশ সদরদপ্তর থেকে জেলা পুলিশ সুপারের মাধ্যমে আমাদের কাছে তার পাসপোর্ট নাম্বার দেওয়া হয়েছে।
‘মোয়াজ্জেম হোসেন যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারেন সেজন্য চেকপোস্টে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। যাতে তিনি এই ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে ভারতে যেতে না পারেন।’
উল্লেখ্য, ফেনীর সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলা তুলে না নেওয়ায় ৬ এপ্রিল কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় নুসরাতের গায়ে।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিদের ধরতে গড়িমসির অভিযোগ ওঠার পর ১০ এপ্রিল মোয়াজ্জেম হোসেনকে সোনাগাজী থানার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে বদলি করা হয়। ওই রাতেই ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত।
ওই মামলায় নুসরাতের জবানবন্দি নেওয়ার পর তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ঢাকায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। ওই মামলায় গত ২৭ মে বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনাল এই পুলিশ কর্মকর্তাকে ধরতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় সমালোচনার মুখে এপ্রিলের শুরুতে ওসি মোয়াজ্জেমকে সোনাগাজী থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় পুলিশের রংপুর রেঞ্জে। পরে তাকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়।
তারপর আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল নিয়ে ফেনী পুলিশের সঙ্গে রংপুর পুলিশের জটিলতার মধ্যে লাপাত্তা হয়ে যান ওসি মোয়াজ্জেম। পরে ফেনী পুলিশই ওই পরোয়ানা তামিলের কাজ শুরু করে।
ওসি মোয়াজ্জেম পালিয়ে গেছেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হলেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির দুই দিন পর আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আইনজীবীর মাধ্যমে তার আবেদন জমা পড়ে।
শার্শা থানার ওসি এম মশিউর রহমান বলেন, মোয়াজ্জেম হোসেনের গ্রেফতারের আদেশ তার বাড়ি যশোরে পাঠানোর পর সীমান্তবর্তী শার্শা ও বেনাপোল পোর্ট থানাকে তা অবহিত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তারা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।
সীমান্তে কড়া নজরদারি রয়েছে বলে জানিয়েছেন যশোর-৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ সেলিম রেজা।
মোয়াজ্জেম হোসেনের বাবা ঝিনাইদহের বাসিন্দা হলেও কয়েক যুগ আগেই যশোর শহরের রায়পাড়ায় জমি কিনে স্থায়ী বসবাস শুরু করেন। ওই বাড়িতেই শৈশব কাটে মোয়াজ্জেমের। যশোরের বাড়িটিতে এখন তার দুই ভাই ও এক বোন মায়ের সঙ্গে বসবাস করেন।
এ দিকে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) আনসার উদ্দিন বলেন, মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেফতারি পরোয়ানার একটি কপিসহ কিছু নির্দেশনা বুধবার (১২ জুন) তাদের হাতে এসেছে।
ওডি/এএসএল
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড