নবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
ঢাকার নবাবগঞ্জে শ্যালো মেশিন বসিয়ে কৈলাইল, শিকারীপাড়া ইউনিয়নের অন্তত ৫ টি পয়েন্টে ফসলি জমিতে পুকুর খনন করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে আশপাশের ফসলি জমি, বসতবাড়িসহ সড়ক ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
অন্যদিকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করায় এই খাত থেকে প্রতিবছর লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। উপজেলার কৈলাইল, তেলেঙ্গা ও গরিবপুর এলাকায় সরেজমিন ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী পাম্প, খননযন্ত্র (ড্রেজিং) বা অন্য কোনো মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও রাজধানীর পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলায় এ আইন মানা হচ্ছে না। শ্যালো মেশিন পুকুরে বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। কৈলাইল ও শিকারীপাড়া ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট স্থানীয় দরিদ্র কৃষকদের মালিকানা জমি অল্প দামে কিনে বালু ও মাটি বিক্রি করছে।
কৈলাইল গ্রামের মাসুদ মিয়া জানান, সরকারি দলের কর্মী পরিচয় দিয়ে, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে কৈলাইল গ্রামের শহিদ দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। তার অবৈধ বালু ব্যবসার সাথে বেশ কিছু রাজনৈতিক নেতা জড়িত রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৈলাইল ইউনিয়নের তেলেঙ্গা গ্রামের এক ব্যবসায়ী বলেন, বেশ কয়েকবছর ধরে বিভিন্ন কৌশলে আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় দিয়ে, কৈলাইল গ্রামের মো. শহিদুল ইসলাম, আবুল কাসেম, নয়াকান্দার মফছের আলী, হাবিব (ডয়েস) কাটাখালীর আনোয়ার, মেলেং গ্রামের আব্দুল ওহাব এ সিন্ডিকেট মাটি ও বালু বিক্রি করছে।
প্রতিনিয়ত বালু ও মাটি উত্তোলনের ফলে রাস্তাঘাটের ক্ষয়ক্ষতি ও কৃষি জমি ধ্বংস হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করা হলে মাঝে মধ্যে যন্ত্রপাতি জব্দ ও জরিমানা করা হলেও বালু উত্তোলন থামছে না। প্রশাসন থেকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এই বালু ও মাটির বেচা-কেনার মূলহোতা উপজেলার কৈলাইল গ্রামের বাসিন্দা মো. শহিদুল ইসলাম। তিনি ব্যক্তি মালিকানা জমিতে পুকুর সমান গর্ত করে মেশিন লাগিয়ে বালু মাটি উত্তোলন করছেন। এছাড়া শিকারীপাড়া গরিবপুর এলাকার সোহেল নামের কতিপয় নামধারী যুবলীগ নেতা শ্যালো মেশিন বসিয়ে দিনরাত বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে।
অবৈধ বালু উত্তোলনকারী কৈলাইলের শহিদুল ও গরিবপুরের সোহেলকে বালু উত্তোলনের বিষয় মুঠোফোনে জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘আপনারা তো সবই জানেন। আমাকে জিজ্ঞেস করেন কেন? আমরা অল্প কয়েক দিন যাবত শুরু করেছি। ব্যবসার অবস্থা ভালো না।’ পরিবেশ প্রকৃতির ক্ষতি করে কিভাবে অবৈধ বালু ব্যবসা করেন-এমন প্রশ্নের জবাবে তারা কোন কথা না বলে সংযোগটি কেটে দেন।
নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এইচ.এম সালাউদ্দিন মঞ্জু বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওডি/এসজেএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড