সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
বর্ষা শুরুর আগেই সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার শুভগাছা থেকে পাটাগ্রাম পর্যন্ত প্রায় সাত কিমি এলাকায় যমুনা নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে প্রায় শতাধিক বসতভিটা-ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বর্ষার আগে প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া না হলে বেশ কয়েকটি গ্রাম বিলীন হবার আশঙ্কা রয়েছে। আর পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, ভাঙন ঠেকাতে আপাতত বালু ভর্তি জিওব্যাগ ফেলানো হচ্ছে। বর্ষা শেষে আগামী শুষ্ক মৌসুমে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হবে।
জানা যায়, যমুনা নদী সিরাজগঞ্জ অংশের ডান তীর ছুঁয়ে গেছে প্রায় ৮০কিলিমিটার অংশ আর বাম তীর ছুঁয়ে গেছে প্রায় ৩০ কিলোমিটার। এর মধ্যে কিছু অংশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সংরক্ষন বাঁধ নির্মাণ করলেও অনেকাংশ অরক্ষিত রয়েছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে অরক্ষিত অংশে দেখা দেয় ব্যাপক ভাঙন। নদী তীরের একেকটি পরিবার প্রায় ১০ থেকে ১২ বার ভাঙেনর কবলে পড়ে বসতভিটা-ফসলী জমি হারিয়ে ইতোমধ্যে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার। এবারও বর্ষা শুরুর আগেই অরক্ষিত অংশের সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার শুভগাছা থেকে পাটাগ্রাম পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে প্রায় শতাধিক বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বর্ষার আগেই ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেয়া না হলে বেশ কয়েকটি গ্রাম বিলীন হবার আশঙ্কা রয়েছে।
শুভগাছা গ্রামের বাসিন্দা জুড়ান আলী জানান, শুভগাছার সাতাশটি গ্রাম ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে আরেকটি গ্রামের শতাধিক বসতভিটা ও ফসলী জমি বিলীন হয়ে গেছে। মানুষ সবকিছু হারিয়ে ওয়াপধার বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে।
বৃদ্ধ হারুন ও আরশেদ জানান, এ পর্যন্ত ১০-১২ বার নদী ভাঙনর কবলে পড়েছি। বাপ দাদার ভিটেমাটি হারিয়ে অন্যের জায়গা কট নিয়ে বসবাস করছি। এবার যদি ভাঙনের কবলে পড়ি তবে খোলা আকাশ ছাড়া উপায় নেই। বর্ষার শুরুর আগেই যে ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা না নিলে আমাদের আর রক্ষা নেই।
একই গ্রামের রফিকুল ইসলাম জানান, আমরা গরীব। কিন্তু সরকারের কাছে রিলিফ চাই নাই। আমরা চাই একটু শান্তিতে থাকতে। সরকার যদি বর্ষার আগে নদীভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নেয় তবে আমাদের শেষ সম্বলটুকুও নদীতে চলে যাবে। তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড সকালে বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলছে বিকেলে ভেঙে নদীতে চলে যাচ্ছে। তাই শুভগাছাসহ আশপাশের গ্রামগুলো রক্ষায় দ্রুত স্থায়ী রক্ষা বাঁধ নির্মাণ খুব জরুরী হয়ে পড়েছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, শুভগাছা এলাকায় স্থায়ী বাঁধ রক্ষায় ইতোমধ্যে দরপত্র সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু এবার বর্ষা মৌসুমের আগে স্থায়ী বাঁধের কাজ করা সম্ভব নয়। বর্ষার পর স্থায়ী বাঁধের কাজ করা হবে তবে আপাতত ভাঙনরোধে বালু ভর্তি জিওব্যাগ নিক্ষেপ করা হচ্ছে।
ওডি/এসজেএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড