বাগেরহাট প্রতিনিধি
স্বামী কর্তৃক এক গৃহবধূর ভারতে পাচার হওয়ার ৯ মাস পর বাগেরহাটের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তাকে উদ্ধার করেছে। বেনাপোল সীমান্ত পুলিশের সহায়তায় বাগেরহাট পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের পুলিশ পরিদর্শক মঞ্জুরুল হাসান মাসুদসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে বাগেরহাটে নিয়ে আসে।
উদ্ধার হওয়া গৃহবধূকে বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন যাবত মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে ওই গৃহবধূর মা বাদী হয়ে মানব পাচার প্রতিরোধ দমন আইনে বাগেরহাট আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। মামলায় গৃহবধূর স্বামী নড়াইল সদর উপজেলার বড় কুলা গ্রামের আসাদ শেখের ছেলে আরিফ শেখ, আরিফের ভাই ফয়সাল শেখ, মাতা পরী বেগম এবং পিতা আসাদ শেখকে আসামি করা হয়। পরে আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে বুধবার (১২ জুন) বেনাপোল সীমান্ত থেকে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে পিবিআইর কর্মকর্তারা। উদ্ধার হওয়া গৃহবধূ বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুরে বলেন, ২০১৭ সালের ১লা এপ্রিল আরিফের সাথে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে আরিফ আমাকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করত। আরিফের মা-বাবা প্রায় আমাকে আরিফের সঙ্গে ভারত গিয়ে কাজ করে খেতে বলত। ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসের দিকে কৌশলে আরিফ আমাকে নিয়ে ভারতে চলে যায়। পরে আরিফ আমাকে বোম্বের একটি ফ্লাটে নিয়ে রাখে। সেখানে আগে থেকেই তিনটি মেয়ে ছিল। তিনদিন সেখানে থাকার পরে পাশের একটি ফ্লাটে আমাকে নিয়ে যায় আরিফ। সেই ফ্লাটে মাঝে মাঝে আরিফের বন্ধুরা আসত এবং আমাকে নির্যাতন করত। ওই ফ্লাটে দুই মাস থাকার পরে বোম্বে পুলিশ আমাকে থানায় নিয়ে যায়। সে সময়ে আরিফ ছিল না। পরে সেখান থেকে নবজীবন নামের একটি এনজিওর কাছে আমাকে হস্তান্তর করে পুলিশ। সেখানে আটমাস থাকার পরে জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা আমাকে নবজীবন এনজিওর কাছ থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। পরে তাদের কাছ থেকে পিবিআই আমাকে নিয়ে আসে।
উদ্ধার মেয়েটির বিধবা মা বলেন, অনেকদিন পরে মেয়েকে কাছে পেয়ে আমরা খুব খুশি হয়েছি। এখন আইনি প্রক্রিয়া শেষে মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে যেতে চাই। এ সময় তিনি বলেন, বিয়ে করে স্ত্রীকে যে পুরুষ পাচার করতে পারে, আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
বাগেরহাট পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক বলেন, আদালতের নির্দেশে আমরা পাচার হওয়া মেয়েটির বিষয়ে তদন্ত শুরু করি। এক পর্যায়ে আমরা মেয়েটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হই। আদালতে ১৬৪ ধারার ওই মেয়েটির জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
ওডি/আইএইচএন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড