মো: আফসার খাঁন বিপুল,কালিয়াকৈর
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের জাথালিয়া বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুমোদন ছাড়াই প্রায় দেড় লাখ টাকার গাছ বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই বিক্রিত গাছগুলো রাতের আঁধারে পাচার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। গাছ বিক্রির ঘটনায় ওই বন কর্মকর্তার নামে বিভাগীয় বন সংরক্ষক (ডিএফও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কাচিঘাটা রেঞ্জ কর্মকর্তা।
এলাকাবাসী ও বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, কালিয়াকৈর উপজেলার কাচিঘাটা রেঞ্জ অফিসের আওতায় জাথালিয়া বিট অফিস রয়েছে। ওই বিট অফিসের পাশ দিয়ে কালিয়াকৈর-ফুলবাড়িয়া-মাওনা আঞ্চলিক সড়ক চলে গেছে। ওই সড়ক সংলগ্ন জাথালিয়া বিট অফিসের মূল গেটের সামনে দু-পাশে দীর্ঘদিনের পুরোনো গাছ রয়েছে। এর মধ্যে ১৮টি গাছ ওই জাথালিয়া বিটের বন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর গত ১৬-১৭ দিন আগে কৌশলে বিক্রি করে দেন। গাছের মূল্য বাবদ তিনি স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী লেহাজ উদ্দিন, সুরুজ মিয়াসহ কয়েকজনের কাছে ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা নেন।
স্থানীয়রা বলছেন, গাছগুলো সড়ক বিভাগের। কেউ কেউ বলছেন, গাছগুলো বনবিভাগের, আবার কেউ কেউ বলছেন, গাছগুলো পাশের ব্যক্তি মালিকানাধীন। কিন্তু ওই বন কর্মকর্তা অনুমোদন ছাড়া কিভাবে গাছগুলো বিক্রি করে দিলেন?-এই উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে।
গাছ কাটার পর এ নিয়ে এলাকায় হৈচৈ পড়ে যায়। খবর পেয়ে ওই সময় কাচিঘাটা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মহসিন বনের সাতটি গাছ জব্দ করেন এবং বাকি গাছগুলো ওই অফিসের পিছনের রাখেন। এ ঘটনায় রেঞ্জ কর্মতর্কা মো. মহসিন গাছ বিক্রি করায় ওই জাথালিয়া বিটের বন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে ডিএফও কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
কিন্তু বিট কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর এতে থেমে থাকেননি। তিনি রাতের আঁধারে ওই গাছগুলো পাচার করেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। গাছ কাটার পর গাছের মোথা ভেকু দিয়ে মাটি কেটে তা ভরাট করে দেন বলে নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক অনেকেই জানিয়েছেন। বর্তমানে ওই খানে গাছের মোথাও রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই বিট কর্মকর্তা এ অফিসের যোগাদানের পর থেকেই নানা অনিয়ম দুর্নীতি করে আসছেন। ছোট ঘর নির্মাণ করলেও মামলার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন ওই কর্মকর্তা। এ ছাড়া প্লটের গাছ বিক্রি করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে কাচিঘাটা বিট অফিসের বনপ্রহরী মো. রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে দালালদের মাধ্যমে বনের গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে।
কাচিঘাটা এলাকায় গিয়ে রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়াও ওই এলাকায় নিরীহ লোককে মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়েরও অভিযোগ রয়েছে রফিকুলের বিরুদ্ধে। তবে অভিযুক্ত জাথালিয়ার বন কর্মকর্তার ও কাটিঘাটা বিটের বন প্রহরীর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জাথালিয়া বিট কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বলেন, ওই বিট অফিসের সামনে ১৮টি গাছ কাটা হলেও এ বিষয়টি আমার জানা নেই । আপনারা দেখেন কয়টি গাছ কাটা হয়েছে।
তবে ওই অফিসের বাগান মালি বলেন, অফিসের সামনে রাস্তায় যে গাছগুলো ছিল, সেগুলো পাশের মসজিদের ইমামের থাকার ঘর তৈরি করার জন্য স্যার ও স্থানীয় কয়েকজন বসে গাছগুলো বিক্রি করেছেন। পরে জানা জানি হলে রেঞ্জ কর্মকর্তা সে গাছগুলো জব্দ করে। বর্তমানে গাছগুলো কোথায় আছে, তা আমিও বলতে পারলাম না।
এ ব্যাপারে কাচিঘাটা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মহসিন বলেন, গাছগুলো রাস্তার, বনের বা ব্যক্তি মালিকানাধিন কিনা তা বুঝি না। অফিসের সামনের বাগান গাছ অনুমোদন ছাড়াই বিট কর্মকর্তা বিক্রি করেছেন। খবর পেয়ে সেখান থেকে বনের সাতটি গাছ জব্দ করেছি। বাকি গাছগুলো অফিসের পিছনে উঠিয়ে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় ডিএফও বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু রাঁতে অফিসের পেছন থেকে সেই গাছগুলো কে বা কারা নিয়ে গেছে, তা এখনো জানা যায়নি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
ওডি/এসএএফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড