মো. জাবেদ শেখ, শরীয়তপুর
সেতু ধসে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে ৫ বছর। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দুই দফায় বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়। ১০ দিন ধরে শেষ ভরসাটিও আর নেই। ভেঙে পড়েছে সেই বাঁশের সাঁকো। এত বন্ধ হয়ে গেছে ২০ গ্রামের হাজারও মানুষের চলাচল। এমন দুর্ভোগের চিত্র দেখা যায় শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়নের আলী বক্স মাদবরকান্দি গ্রামে।
জানা যায়, পাঁচ বছর আগে বন্যার পানির স্রোতে সেতুটি একেবারেই বিধ্বস্ত হয়ে যায়। পরে বন্ধ হয়ে যায় এ পথে চলাচল। এরপর স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে দুই দফায় ওই সেতুর উপর দিয়ে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়। গত দশ দিন আগে সেই বাঁশের সেতুটি ভেঙ্গে পড়ে।
জাজিরা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জাজিরা উপজেলা সদর থেকে পালেরচর বাজার পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার ইটের সড়ক রয়েছে। বড়কান্দি, পালেরচর, পূর্ব নাওডোবা ও কুন্ডেরচর ইউনিয়ন থেকে জাজিরা উপজেলায় যাওয়া এবং আসার সুবিধার্থে বড়কান্দি ইউনিয়নের আলিবক্স মাদবরকান্দি গ্রামের খালের ওপর একটি পাকা সেতু নির্মাণ করা হয়। ২০১৪ সালের বন্যায় সেই সেতুটি ধ্বসে যায়। ফলে ওই সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পায়ে হেটে চলাচল করার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ওই স্থানে একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করা হয়। ২০১৬ সালে সেটিও ভেঙ্গে যায়। এরপর আবার বাঁশ দিয়ে সেতুটি সংস্কার করা হয়। গত আট দিন আগে সেই সাঁকোটি আবার নতুন করে ভেঙ্গে যায়। আলিবক্স মাদবরকান্দি গ্রামের বাসিন্দা দেলোয়ার মাদবর বলেন, সেতুটি ভেঙ্গে গেছে পাঁচ বছর হলো, এখনও পুননির্মাণ বা সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অথচ এই সড়কটি দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করে।
মুন্সিকান্দি গ্রামের শাহিনুর রহমান বলেন, সেতুটি ভাঙা থাকায় চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গ্রামে উৎপাদিত কৃষিপণ্য হাট-বাজারে নেওয়া যায় না। এ কারণে ফসলের ন্যায্যমূল্য থেকেও আমরা বঞ্চিত হচ্ছি।
চেরাগ আলী সরদারকান্দি গ্রামের বাসিন্দা সাহাদাত হোসেন বলেন, একটি সেতুর কারণে সড়কটি অচল। পায়ে হাঁটা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। গ্রামবাসীর সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় অসুস্থ রোগী নিয়ে। ডেলিভারি রোগীসহ অসুস্থ রোগী নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
বড়কান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম সরদার দৈনিক অধিকারকে বলেন, এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণের জন্য অনেক অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু এলজিইডির কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। দুই দফা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কাঠের সাঁকো নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছিল। এখন উপজেলা পরিষদের বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল থেকে পুণরায় কাঠের সাঁকো নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের প্রকৌশলী বিমলেন্দু রায় দৈমিক অধিকারকে বলেন, উপজেলা পরিষদের বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল হতে ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে কাঠের সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। সে অনুযায়ী টেন্ডার হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার কাজ করছেন না। ৩০ জুনের মধ্যে ঠিকাদার কাজ শুরু না করলে পুণরায় সেতু নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে।
ওডি/এসএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড