কাজী কামাল হোসেন,নওগাঁ
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার একডালা ইউনিয়নের যাত্রাপুর গ্রামে ঘটেছে এক অবিশ্বাস্য ও অলৌকিক ঘটনা! কয়েক দিন আগের ঝড়ে উপড়ে পড়া একটি বট গাছ কেটে নেওয়ার অলৌকিকভাবে অবিকল দাঁড়িয়ে গেছে! চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে দিনের বেলায় সবার চোখের সামনে! ঘটনার পর থেকে প্রতিদিনই উৎসক জনতা গাছটি এক নজর দেখার জন্য ছুটে আসছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের মৃত যদু প্রামানিক ছোট বেলা থেকেই জ্বিনের প্রতি আশক্ত ছিলেন। মাঝে মধ্যেই তার ওপর ভর করতো জ্বিন! প্রায় ৫০ বছর আগে জ্বিন ভর করা অবস্থায় যদু প্রামানিক ছোট একটি বট গাছ নিয়ে এসে রোপণ করেন। ধীরে ধীরে গাছটি বড় হতে থাকলে মাদারের গাছ বা জ্বিনের হিসেবে পরিচিতি পায় বটগাছটি।
জ্বিন বা মাদারের স্বরণে প্রতি বছর সেখানে মাদারের পালা গানের আসরও বসে। এছাড়া নানা রোগ-বালায়ে আক্রান্ত দূর-দূরান্ত লোকজন তাদের ব্যাধি দূর করতে ওই গাছের মানত করতো। অনেকের দাবি, এই গাছে মানত করে অনেক লোকজন রোগ থেকে মুক্তিও পেয়েছে।
গত মাসে সারা দেশে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে গাছটি উপড়ে পাশের একটি পাকা ভবনের ওপর পড়ে। এতে ওই ভবনের সিড়ি রুম এবং ছাদের কিছু অংশে ক্ষতিও হয়েছে। কিন্তু গাছটি উপড়ে গেলেও জ্বিনের ভয়ে কেউ ডালপালা পর্যন্ত কাটতে সাহস পায়নি। ফলে মাস খানেক ধরে গাছটি ওই অবস্থায় পড়ে থাকে। রোজার একদিন আগে গাছ কাটা শ্রমিক নিয়ে এসে গাছের ডালপালা কাটতে থাকে। গাছের মাথার অংশ কাটার সময় হঠাৎ করেই গাছটি অবিশ্বাস্যভাবে অবিকল আগের মতো দাঁড়িয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পড়ে থাকা গাছের ওপর একজন শ্রমিক পানির বদনা হাতে দাঁড়িয়ে কাজ করছিলেন। কিন্তু গাছ দাঁড়িয়ে গেলেও লোকটি গাছ থেকে পড়েও যায়নি এমনকি তার এতটুকু ক্ষতিও হয়নি।
ঘটনা জানাজানি হবার পর থেকেই প্রতিদিনই উৎসক জনতা ছুটে আসছেন গাছটি এক নজর দেখার জন্য। অনেকে মনে করছেন, গাছটি উপড়ে যাবার সময় ডালপালার কারণে মাথার অংশ অনেক ভারী ছিল। সেগুলো কেটে দিলে গোরার অংশ ভারী হওয়ায় গাছটি হয়তো দাঁড়িয়ে গেছে। তবে একদম আগের মতো অবিকল দাঁড়িয়ে যাওয়া, গাছের শিকড়, গোড়ালি মিলে যাওয়াটাও অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন তারা।
গাছের পাশের বাড়ির সুফিয়া বেওয়া (৫৫) জানান, বিয়ের পর থেকে তিনি এই গাছ দেখছেন, গাছের পাশে টয়লেট ছিল তাদের। রাত-বিরাত পর্যন্ত সেখানে চলাচল করলেও কোনো আলামত দেখতে পাননি তারা। তবে সেখানে লোকজন মানত করতো, প্রতি বছর মাদারের পালা গান বসে। বৃদ্ধ হেকমত আলী (৬০) জানান, গাছটি অবিকল দাঁড়িয়ে যাওয়াটা একদম অস্বাভাবিক এবং অলৌকিক।
গাছের তদারকিকারী ও মাদারের পালা গানের আয়োজক সুরজান বেওয়া (৭৫) ও পুটি বেওয়া (৬২) জানান, ওই গাছে মাদার (জ্বিন) বাস করে। প্রতি বছরই গাছের নিচে মাদার স্বরণে পালা গান করতে হয়, না করলে অনেক সমস্যা হয়।
তারা যুক্তি দিয়ে বলেন, একশত জন লোক এসে গাছটি খাড়া করতে পারবে না। যদিও পারে তাহলে অবিকল দাঁড়িয়ে রাখার ক্ষমতা নেই। তাদের পূর্ণ বিশ্বাস, জ্বিনই গাছটিকে মাদারই দাঁড় করিয়ে রেখেছে!
ওডি/ এসএএফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড