বাগেরহাট প্রতিনিধি
ঈদে বান্ধবীর বাড়ি বাগেরহাটের শরণখোলায় বেড়াতে এসে কতিপয় চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীর হাতে শ্লীলতাহানি ও মারধরের শিকার হয়েছে অন্তঃসত্ত্বা পিংকি (১৭) ও হাফিজা (১৫) নামের দুই কিশোরী। এমনকি আপত্তিকর ছবি তুলে হুমকি দিয়ে বলা হয় ঘটনা প্রকাশ করলে ছবিগুলো নেটে ছেড়ে দেওয়া হবে।
এ ঘটনায় বাঁধা দেওয়ায় অপর বান্ধবীর বাবা, মা ও ভাবী সুমিসহ মোট ১১ জনকে মারধর করে আহত করে সন্ত্রাসীরা। এদের মধ্যে আহত পিংকি ও সুমি আকতারকে শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
শরণখোলা উপজেলার মধ্য খোন্তাকাটা গ্রামের মোশারেফ হোসেন বলেন, তার মেয়ে বেবী আকতার ঢাকার কেরানীগঞ্জে চাকরি করার সুবাদে ওই এলাকার অপর চাকরিজীবী পিংকি আকতার ও হাফিজা আকতার মিলে এক সঙ্গে ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। গত ঈদের ন্যায় এবারের ঈদে পিংকি ও হাফিজা মেয়ে বেবীর সঙ্গে তার বাড়ি উপজেলার মধ্য খোন্তাকাটায় বেড়াতে আসেন।
এ সময় তিনি বলেন, এলাকার বখাটে জসিম উদ্দিন ও সোহেলের নেতৃত্বে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম দর্জি, মিজান সরদার, ইয়াকুব মিস্ত্রি, এলাকার মহিলা মেম্বার রোকেয়া বেগম ও চৌকিদার সগির হোসেনসহ কতিপয় চাঁদাবাজ বখাটে শুক্রবার (৭ জুন) রাত ৯টার দিকে নষ্টা মেয়ে আখ্যা দিয়ে পিংকি ও হাফিজাকে আমার বাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে ধরে খোন্তাকাটা বাজারের আনসার ও ভিডিপি ক্লাবে নিয়ে যায়। সেখানে দরজা জানালা বন্ধ করে তাদের মারধর, শ্লীলতাহানি এবং ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। এমনকি হাফিজা ও পিংকির আপত্তিকর ছবি তুলে শাসিয়ে বলা হয় সাংবাদিক কিংবা কাউকে ঘটনা জানালে এ ছবি নেটে ছেড়ে দেওয়া হবে। এ বিষয়ে মহিলা মেম্বার রোকেয়া কিশোরীদেরকে জসিম ও সোহেল শ্লীলতাহানি করার কথা স্বীকার করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।
অপরদিকে ঘটনার নেতৃত্বদানকারী জসিম নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, নুরুল ইসলাম ও রোকেয়া দুইজনে তাদেরকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যান। নুরুল ইসলাম তাদের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন। তবে নুরুল ইসলাম এসব বিষয় অস্বীকার করেছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এলাকার ইউপি সদস্য হাসানুজ্জামান জমাদ্দার ও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি এনামুল জমাদ্দার কবির ও স্থানীয় যুবলীগ নেতা তরিকুল ইসলাম অপু মারধর ও শ্লীলতাহানির কথা স্বীকার করে বলেন, তারা এদেরকে নিবৃত্ত করার শেষ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে আহতদের উদ্ধার করেন।
ভুক্তভোগীর বাবা মোশারেফ হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সন্ত্রাসীরা ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন খানের লোক বিধায় থানা থেকে শালিস করার কথা বলে নিয়ে এসে কালক্ষেপণ করছেন।
শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ দিলীপ সরকার জানান, ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। স্থানীয় চেয়ারম্যান মীমাংসার কথা বলে উভয় পক্ষের দায়িত্ব নেন। যদি সমাধান না হয় তাহলে এজাহার দিলে মামলা দায়ের করা হবে।
ওডি/এএসএল
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড