ভৈরব প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে এক কলেজ শিক্ষার্থীর গাঁয়ে মদ ছিটিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগে গণধোলাইয়ের শিকার দুই এসআইকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। তারা হলেন, ভৈরব থানার এসআই আবুল খায়ের ও এসআই আজিজুল হক। কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ লিখিত আদেশে অভিযুক্ত পুলিশের দুই এসআইকে প্রত্যাহার করেন।
মঙ্গলবার (৪ জুন) সকাল থেকে এ আদেশ কার্যকর হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন ঘটনার তদন্ত কর্মকতার্ কিশোরগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান।
পুলিশ সুপার জানান, অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে সাদা পোশাকে চেকপোস্ট বসানো ও মাদকের সিজার লিস্ট না করার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর তদন্তকারী কর্মকর্তারা অভিযোগকারী ছাত্র সজিবের সঙ্গে কথা বলতে পারেনি। তারা সজিবের বক্তব্য নিয়ে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয় লোকজন জানায়, ভৈরবের শম্ভুপুর পাক্কারমাথা এলাকার সাবু মিয়ার ছেলে ভৈরব সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সজিব। গত শনিবার দুই বন্ধুকে নিয়ে সজিব মোটর সাইকেলে করে ঈদের কেনাকাটার জন্য ভৈরব বাজারে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে চান্দ ভান্ডার দরবার শরীফের সামনে সাদা পোশাকে পুলিশের দুইজন সদস্য সজিবকে আটক করে।
এ সময় তারা সজিবের গায়ে মদ ঢেলে দিয়ে তাকে মাদক ব্যবসায়ী সাজানোর চেষ্টা করে বলে সজিবের পরিবারের অভিযোগ। সজিব কৌশলে সেখান থেকে সটকে পড়ে পাক্কার মাথা এলাকায় চলে যান। পুলিশ সদস্যরাও তার পিছু নেয়। পরে সজিবকে জোর পূর্বক ধরে হাতকড়া পড়াতে চাইলে পুলিশের পোষাক পড়া না থাকায় স্থানীয় লোকজন ছিনতাইকারী ভেবে দুজনকে গণধোলাই দেয়। এক পর্যায়ে এসআই আজিজুল হক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
সূত্র জানায়, ঘটনার খবর পেয়ে ভৈরব থানার এসআই মোখলেছুর রহমান রাসেল ও অভিজিৎসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য গিয়ে আবুল খায়েরকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় পুলিশ সজিকের বাবা সাবু মিয়াসহ ৫ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। অন্যরা হলেন, মোহাম্মদ আলী, মিজান মিয়া, ইয়াকুব ও রহিম মিয়া। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে মর্মে থানায় বিষয়টি মীমাংসা করা হয়। মীমাংসার পর আটক ৫জনকে ছেঁড়ে দেয় পুলিশ। অভিযোগ রয়েছে আটক ৫ জনকেও ছাড়িয় নিতে ৫০হাজার টাকায় ঘটনাটি রফাদফা করা হয়।
ঘটনাটি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদের নজড়ে আসে। পরে গতকাল সোমবার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মিজানুর রহমানকে প্রধান করে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে দেন। তদন্ত কমিটি গতকাল দুপুরে সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রাথমিকভাবে পুলিশের দুই সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পায়।
ওডি/এসএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড