• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

উড়ালসড়কে যানজট মুক্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক

  কালিয়াকৈর প্রতিনিধি, গাজীপুর

২৯ মে ২০১৯, ১৭:৩৯
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক
যানজট মুক্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক (ছবি : দৈনিক অধিকার)

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত। দুই ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবের ছুটিতে এই পথে গ্রামের বাড়িতে ফেরেন অসংখ্য মানুষ।

এমন কেউ নেই যে চন্দ্রা ত্রিমোড়ে যানজটে আটকা পড়ে নাজেহাল হননি। বিভিন্ন ছুটি ছাড়াও ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট লেগে থাকতো এই মোড়ে। একই চিত্র ছিল গাজীপুরের কোনাবাড়ীতেও। গত শনিবার (২৫ মে) কোনাবাড়ি ও চন্দ্রা উড়ালসড়কসহ কয়েকটি সেতু খুলে দেওয়ায় সুফল পেতে শুরু করেছেন এ মহাসড়কে চলাচলকারীরা।

মঙ্গলবার (২৮ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোনাবাড়ি ও চন্দ্রা ত্রিমোড়ে যানবাহন আর থামছে না। গাজীপুর থেকে উত্তরবঙ্গ উভয় দিকে দিকে যে পরিবহনগুলো যাবে, তারা উড়ালসড়ক ব্যবহার করে চলে যাচ্ছে। কোথাও তাদের থামতে হচ্ছে না।

অন্যদিকে যে পরিবহনগুলো উত্তরবঙ্গের দিক থেকে সাভারের নবীনগর হয়ে ঢাকা প্রবেশ করবে আবার ঢাকা থেকে সাভারের নবীনগর হয়ে উত্তরবঙ্গের দিকে যাবে, তারা চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় উড়ালসড়কের নিচ দিয়ে চলে যাচ্ছে। যার কারণে কোনাবাড়ি ও চন্দ্রা ত্রিমোড়ে চিরচেনা সেই যানজট দেখা যাচ্ছে না। উড়ালসড়ক ও সেতু খুলে দেওয়ায় এখন যানজট মুক্ত এ মহাসড়ক।

চন্দ্রা ত্রিমোড়ে বাস চালক সাইফুল ইসলাম বলেন, আগে এ মহাসড়কে ৩০ মিনিটের পথ অতিক্রম করতে ৩-৮ ঘণ্টা সময় লাগত। এখন চন্দ্রা ও কোনাবাড়ি এলাকায় ফ্লাইওভারের কারণে সেই পথ অতিক্রম করতে সময় লাগে মাত্র ২৫-৩০ মিনিট। এখন আর যানজটে বসে থাকতে হয় না।

বাস চালক আনোয়ার হোসেন বলেন, চন্দ্রা ও কোনাবাড়ি ফ্লাইওভার খুলে দেওয়ার পর নিচ দিয়েও যানজট ছিল না। তবে কোনাবাড়ি এলাকায় ফ্লাইওভারের নিচে এখনও অনেক যানজট আছে। এ কারণে সেখানে একটু ধীর গতিতে চলতে হচ্ছে।

এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, দেশের উত্তরবঙ্গের ২৩টি জেলার ১১৮টি রোডের হাজারো যানবাহন প্রতিদিন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করে। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগের একমাত্র সহজ মাধ্যম এটি।

এ মহাসড়কে গাজীপুরের কড্ডা, কোনাবাড়ি এবং কালিয়াকৈরের চন্দ্রা ত্রিমোড় ছিল যানজটের অভয়াশ্রম। এখানকার হাইওয়ে, জেলা ও থানা পুলিশ, কমিউনিটি পুলিশসহ স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন এসব এলাকার যানজট নিরসনে ব্যস্ত ছিল। কিন্তু তারা যানজট নিরসনে ছিল বরাবরই ব্যর্থ। ফলে দুটি ঈদে অন্য জেলা-থানা পুলিশ এসব এলাকায় যানজট নিরসনে কাজ করেছে। তাদের পাশাপাশি স্কাউট শিক্ষার্থীরা যানজট নিরসনে কাজ করে। তবুও লেগেই থাকতো সেই চিরচেনা সেই যানজট। ফলে এ পথে যাতায়াতের কথা শুনলেই শরীরে গাম ঝরা শুরু হতো। ফলে এ মহাসড়কটি চারলেনে উন্নীত করণ কাজটি হাতে নেয় বর্তমান সরকার।

এ প্রকল্পে নয়টি উড়াল সড়ক, দুইটি রেলওয়ে ওভারপাস ব্রিজ, ২৬টি সেতু নির্মাণ, ৭৪টি কালভার্ট সম্প্রসারণ, সাতটি আন্ডারপাস ও ১৩টি পথচারী সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে কালিয়াকৈর উপজেলার গোয়ালবাথান এলাকার এবং টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার দেওড়া এলাকার দুটি রেলওভার ব্রিজ খুলে দেওয়া হয়েছে আগেই। এবার ঈদে নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে ঘরমুখো মানুষের বাড়ি ফেরার জন্য কোনাবাড়ি ও চন্দ্রা ত্রিমোড়ে দুটি উড়ালসড়ক খুলে দেওয়া হয়।

এছাড়া দুটি সেতুসহ চারটি ওভারপাস খুলে দেওয়া হয়। গত ২৫ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব উড়াল সড়ক ও সেতু উদ্বোধনের পরপরই যান চলাচলের চিত্র সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। সুফল পেতে শুরু করেছেন এ মহাসড়কের চলাচলকারীরা। সংশ্লিষ্টদের দাবি, এটি খুলে দেওয়ার ফলে এবার ঈদে এ মহাসড়ক দিয়ে নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরবে ঘরমুখো মানুষ।

সালনা কোনাবাড়ি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান জানান, উড়ালসড়ক সেতু খুলে দেওয়ার পর কোনাবাড়ি ও চন্দ্রা ত্রিমোড়ে আর কোনো যানজট নেই। তারপরও ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্নে করতে জেলা পুলিশের পাশাপাশি ২৫০ জন হাইওয়ে পুলিশ সদস্য বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হবে। তবে এবার মহাসড়কটি নিরাপদ ও স্বস্তি দায়ক হবে।

ওডি/এএসএল

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড