রূপগঞ্জ প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে যানজট নিরসনের লক্ষ্যে উপজেলার ভুলতা ও গোলাকান্দাইল এলাকায় তিন তলা বিশিষ্ট ফ্লাইওভারের কাজ চলমান রয়েছে।
প্রায় দুই মাস আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই ফ্লাইওভারের এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের অংশ উদ্বোধনের পর চালু হয়। বর্তমানে এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে তেমন কোন যানজট না থাকলেও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজট এখন নিত্য দিনের সঙ্গী। ঈদকে সামনে রেখে এখন যানজটের ভয়াবহতা বাড়ছে। গতকাল শনিবার (২৬ মে) সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে প্রায় আট কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।
যানজট থাকার কারণে যাত্রীদের যেন ভোগান্তির শেষ নেই। যানজটে আটকা পড়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। যেখানে যেতে সময় লাগার কথা ২০ মিনিট, সেখানে যেতে সময় লাগছে ১-২ ঘণ্টা।
এ দীর্ঘ যানজটের প্রধান কারণ হিসেবে জানা গেছে, ভুলতা ফ্লাইওভার ও রাস্তার নির্মাণ কাজ, যেখানে সেখানে যাত্রী ওঠানামা, চালকের নিয়ম না মেনে গাড়ি চালানো, হাটবাজারে লোড-আনলোড, অবৈধ ফুটপাত, হাইওয়ে পুলিশের বেপরোয়া চাঁদাবাজি।
নিত্য দিনের এ যানজটের কারণে স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী থেকে শুরু করে সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে।
পরিবহন চালক, যাত্রী ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার গোলাকান্দাইল চৌরাস্তা এলাকা দিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে সড়ক ক্রস করেছে। বর্তমানে এশিয়ান হাইওয়ে সড়কটির অংশের ফ্লাইওভার চালু থাকায় তেমন কোন যানজট নেই। তবে, বাইপাস সড়কের যানবাহন গুলো ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে প্রবেশ করলে ওই চৌরাস্তায় চাপ পড়ে। এতে করে এখনও নিত্যদিনের যানজটে পড়তে হচ্ছে যাত্রী সাধারণের।
এছাড়া পুরো ফ্লাইওভার এরিয়ায় ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির সামনের এক পাশে সড়ক পারাপারের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। আর এ পারাপারের স্থান দিয়ে শত শত পথচারী পারাপার হচ্ছে। এ কারণেও যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
এছাড়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক মোটামুটি প্রস্থ হলেও এশিয়ান হাইওয়ে সড়কটি প্রস্থ অনেকটা কম। যার ফলে এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে কোন প্রকার যানবাহন বিকল হয়ে পড়লেই তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ভুলতা ফ্লাইওভারের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন দায়িত্বরত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। তবে, আশা করা যাচ্ছে শীঘ্রই ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অংশ টুকুও চালু হয়ে যাবে। তাহলে যানজট আর থাকবে না বলে দাবি করেন স্থানীয়রা। গাউসিয়া মার্কেটকে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ পাইকারি কাপড়ের বাজার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এ মার্কেটে পাইকারি ও খুচরাসহ প্রায় সাড়ে ৩ হাজার দোকান রয়েছে। মালামাল আনা নেওয়ার জন্য এখানে প্রতিদিন কয়েক শত প্রায় গাড়ি এখানে রাখা হয়। গাউসিয়া মার্কেটের কোন নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা না থাকার কারণে বাধ্য হয়েই চালকদেরকে গাড়ি রাস্তায় রাখতে হচ্ছে। রাস্তায় গাড়ি রাখার ফলে রাস্তা অর্ধেকটা দখল হয়ে যাওয়ায় অন্যান্য গাড়ি চলাচল করতে পারছে না। এতে করে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট। ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
এছাড়া দেখা গেছে, গাউসিয়া মার্কেটের সামনে কয়েক হাজার ফুটপাতের দোকান রয়েছে। ফুটপাতে দোকান থাকার কারণে সাধারণ মানুষকে রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে অনেক সময় যাত্রীদেরকে দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে।
নাম না প্রকাশ শর্তে বেশ কয়েকজন চালক অভিযোগ করে জানান, তাদের গাড়ীর কাগজপত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স সঠিক থাকার পরও পুলিশকে টাকা না দিলে গাড়ী ছাড়া হয় না।
ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও গোলাকান্দাইল মজিবুর রহমান ভুইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রতিদিনের এ দীর্ঘ যানজটের ফলে প্রতিদিনই তাদেরকে স্কুলে যেতে অতিরিক্ত সময় লাগতো। সময়মতো স্কুলে না পৌঁছাতে পারলে তাদেরকে স্যারদের কাছে জবাবদিহি করতে হতো। বর্তমানে এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কের অংশের ফ্লাইওভারটি চালু করার কারণে অনেকটা যানজট কমে আসলেও এখনও যানজটে পড়ে ভোগান্তির শিকার হতে হয় তাদের।
রূপগঞ্জ থানার ওসি মাহমুদুল হাসান বলেন, ঈদকে সামনে রেখে ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি রূপগঞ্জ থানা পুলিশও যানজট নিরসনে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
ওডি/এএসএল
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড