আনোয়ারা প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম
সাগরে মাছ ধরা বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছে চট্টগ্রামের আনোয়ারার মৎস্যজীবীরা। ঈদকে সামনে রেখে দুঃসহ জীবন যাপনে পড়তে হচ্ছে উপকূলের এ সব মৎস্যজীবীদের। নিবন্ধিতরা কিছু সরকারি সহায়তা পেলেও অনিবন্ধিতরা কিছুই পায়নি বলে জানিয়েছেন। এতে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আনোয়ারার জেলে ও মৎস্যজীবীরা।
ঈদকে সামনে রেখে সমুদ্রে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে বলে জানিয়েছেন। আনোয়ারায় নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত মিলে প্রায় ১০ হাজার মৎস্যজীবী রয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে নিবন্ধিত মাত্র ৩ হাজার ৫ শত ৮২ জন।
আনোয়ারা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, মে মাসের শেষের দিক থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে মাছসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর প্রজনন কাল। এ কারণে সাগরের মাছসহ প্রাণীজ সম্পদ রক্ষায় ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বঙ্গোপসাগরের পাশাপাশি নদীর মোহনাও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে। যার কারণে সাগরে মাছ ধরা সব ফিশিং ট্রলার ও নৌকাগুলো আনোয়ারার উপকূলে ফিরে এসেছে।
আনোয়ারার দক্ষিণ গহিরা এলাকার জেলে শওকত নুর বলেন, ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে তার সংসার। পেটের যন্ত্রণায় প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, ঝড়-তুফান উপেক্ষা করে সমুদ্রে মাছ শিকার করতে যাই। একদিন যেতে না পারলে পুরো পরিবার উপোস থাকে। সেখানে ৬৫ দিন সাগরে না গিয়ে কিভাবে থাকবো? আমাদের অন্য কোথাও পুনর্বাসন করা হোক। তা না হলে না খেয়ে মরবো।
ঘাটকূল এলাকার জেলে জাহাঙ্গীর বলেন, আমাদের অনেকের স্থায়ী ঘরবাড়ি নেই। কোনোভাবে অন্যের জায়গায় থাকি। এখন আমাদের বাঁচার উপায় কী?
রায়পুর ইউপি চেয়ারম্যান জানে আলম বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত চাল, তেল, সেমাই, ময়দাসহ ৫ শত পরিবারকে ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। আমার ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ মৎস্যজীবী। তারা দুই মাস বেকার বসে থাকলে সংসার চালাতে খুব সমস্যায় পড়বে। তাদের বিকল্প কোনো পুনর্বাসন করা না গেলে এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। সব জেলেদের বিকল্প হিসেবে ভিজিএফের আওতায় চালসহ নানা সামগ্রী বিতরণের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
আনোয়ারা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হুমায়ন মোর্শেদ বলেন, মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে মাছের প্রজনন সময় শুরু হয়েছে। তাই ২০ মে থেকে ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আনোয়ারায় ৩ হাজার ৫ শত ৮২ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। এছাড়াও অনিবন্ধিত জেলে রয়েছে অনেক। বেকার হয়ে পড়া জেলেদের জন্য মে মাস পর্যন্ত জাটকা প্রকল্পের অধীনে পরিবারের সদস্য অনুপাতে চাল, ডালসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।
ওডি/এমবি
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড