গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুরের শ্রীপুরে সিম বায়োমেট্রিক প্রতারণা চক্রের ৪ সদস্যকে আটক করেছে শ্রীপুর থানা পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে গোপনে বায়োমেট্রিক করা ৪০টি সিমসহ বায়োমেট্রিক করার ৩টি ট্যাব, ৫টি মোবাইল ও স্কিন প্রিন্টার উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (২২ মে) দিনব্যাপী ফরিপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করেন শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম মোল্লা বিপিএম।
আটেকরা হলো- ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা থানার গয়েশপুর গ্রামের মাহমুদ শেখের ছেলে লালন শেখ (২৫), একই থানার লস্করদিয়া গ্রামের সোবাহান শেখের ছেলে ইমরান হোসেন (২১), ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানার ভাটপাড়া গ্রামের ছালাম খানের ছেলে রাশেদ আহম্মেদ খান (২৪) ও ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা থানার শসা গ্রামের এস্তেফা মাতব্বর ছেলে শাহীন মাতব্বর (২৭) ।
গোপনে যাদের নাম দিয়ে বায়োমেট্রিক করা হয়েছে এমন কয়েকজন ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলে তাদের সম্পর্কে ভয়াবহ তথ্য পাওয়া যায়।
নিজের নামে ৭টি সিম বায়োমেট্রিক করা ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানার ভুক্তভোগী গৃহিণী তাহমিনা বেগম বলেন, গত তিন মাস আগে দুইজন ছেলে এসে বলল, খালা সিম কিনবেন মাত্র ১০ টাকা। তখন আমার ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে ফিংগার দিলাম। ৮ থেকে ৯ বার আঙুলের ছাপ দেয়ার পরও তারা আমাকে জানায় হয়নি। আমি না দিতে চাইলে তারা বলে এবারই শেষ, দেন হবে। এমন করার পরও তারা আমার আইডি কার্ড ফিরিয়ে দিয়ে বলে আজ হবেনা।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম মোল্লা বিপিএম জানান, ঘটনার শুরু একটি ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির লোডেড ট্রাক উধাও হওয়াকে কেন্দ্র করে। গত মার্চ মাসের ২৩ তারিখ শ্রীপুর উপজেলার এক্স সিরামিক কারখানা থেকে বিবাড়িয়া ট্রান্সপোর্টের একটি ট্রাক টাইলস বোঝাই করে খুলনার রিপা এন্টারপ্রাইজে যাচ্ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে ট্রাক না পৌঁছায় ট্রান্সপোর্ট কোম্পানিগুলো একে অপরের সাথে যোগাযোগ করেন। পরে ট্রাক চালক ইমরান শেখকে ফোন দিলে তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়। চালকের সহকারীকে ফোন দিলে তা অন্য একজন রিসিভ করেন। যোগাযোগের জন্য ট্রাকের মালিকের মোবাইলে ফোন দিলে সেটিও বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টি নিয়ে তখন থানায় মামলা দায়ের হয়। এ ঘটনার সাথে টেলিকম সেবা দাতা প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন জড়িত বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, মামলার প্রেক্ষিতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে আসামি ট্রাক চালক ইমরান শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে একটি মোবাইল সেটসহ তার দেহ তল্লাশি করে আরও ৪টি বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রারড সিম উদ্ধার করা হয়। পরে তার কাছ থেকে তথ্য নিয়ে এ ঘটনায় জড়িত আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, ইমরান, রাশেদ ও শাহীন গ্রামীন ফোন কোম্পানির এস আর হিসেবে চাকরি করেন। তারা লালন শেখকে বায়োমেট্রিক করার জন্য বিভিন্ন সময়ে মোবাইল ফোনের সিম সাপ্লাই দিত। গ্রেপ্তারের পর ২৩ মে বৃহস্পতিবার কোর্টে নিয়ে তাদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ।
ওডি/এসজেএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড