নিজস্ব প্রতিবেদক
একজন মাছ বিক্রেতা আন্তরিকভাবে ‘দিদি’ বলে ডেকেছেন। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে বিক্রেতার মাছের থালায় লাথি দিয়ে ড্রেনে ফেলে দিলেন সরকারি কর্মকর্তা। সঙ্গে ইংলিশ গালিও দিলেন। তিনি সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সঞ্চিতা কর্মকার।
রবিবার (১২ মে) ঘটনাটি ঘটেছে। এসিল্যান্ডের এমন কাণ্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি এখন ভাইরাল। সমালোচনার ঝড় বইছে দেশব্যাপী।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার সকালে এসিল্যান্ড কার্যালয়ের গেটের পাশে বসে এক মাছ বিক্রেতা মাছ বিক্রি করছিলেন। এমন সময় সঞ্চিতা কর্মকার গাড়ি নিয়ে অফিসে প্রবেশ করছিলেন। অফিসে প্রবেশকালে গাড়ি থামিয়ে দেন তিনি। গাড়ির ভেতরে বসেই গেটের পাশ থেকে বিক্রেতাকে সরে যেতে বলেন। মাছ বিক্রেতা লায়েক আহমেদ বলেন, ঠিক আছে দিদি, মাছ সরিয়ে নিচ্ছি। দিদি সম্বোধন শোনার পরই ক্ষেপে যান এসিল্যান্ড সঞ্চিতা। তিনি গাড়ি থেকে নেমে বলেন, আমি কীসের দিদি! এরপরই লাথি মেরে লায়েক আহমেদ ও হাসান মিয়ার মাছের ঝুড়ি পাশের ড্রেনে ফেলে দেন তিনি।
এ সময় মাছ বিক্রেতা ও উপস্থিত জনতা সরকারের উর্ধ্বতন এ কর্মকর্তার আচরণে হতবাক হয়ে যান। এ ঘটনায় পুরো উপজেলায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, এসিল্যান্ড কার্যালয়ের ভেতরে বসে কোনো মাছ বিক্রেতা মাছ বিক্রি করেননি। সেটি করলে তিনি আইনি ব্যবস্থা নিতে পারতেন। কিন্তু লাথি মেরে বিক্রেতাদের মাছ ড্রেনে ফেলে দিয়ে তিনি ঠিক করেননি। তিনি এ কাজের মাধ্যমে মাছ বিক্রেতাদের রুজি-রুটিতে লাথি মেরেছেন। এমন আচরণ একজন সরকারি উর্ধ্বতন কর্মকর্তার থেকে কেউ আশা করে না।
এ ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সঞ্চিতা কর্মকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজি বদরুদ্দোজা বলেন, মাছ বিক্রেতাদের সঙ্গে এসিল্যান্ডের দুর্ব্যবহারের বিষয়টি গত ১৩ মে উপজেলার সভায় আমি তুলেছিলাম। তবে এসিল্যান্ডের পক্ষ থেকে মাছ বিক্রেতাদের সান্ত্বনা দিতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
লাথি দিয়ে বিক্রেতাদের মাছ ড্রেনে ফেলে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন সঞ্চিতা কর্মকার। তিনি বলেন, বিক্রেতারা মাছ নিয়ে অফিসের ভেতরে ঢুকেছিল। বারবার নিষেধ করেছি, কিন্তু তারা মানেনি। বিক্রেতাদের নিয়ে আসা মাছের দুর্গন্ধে অফিসে কাজ করতে খুবই কষ্ট হয়। তাদের সরাতে না পেরে আমি রেগে লাথি দিয়ে মাছ ফেলে দিয়েছি। তারপরও বিষয়টি ঠিক করিনি। এজন্য আমি তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করতে রাজি।
ওডি/এমআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড