• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ধানের দাম নেই, ঋণ পরিশোধে চিন্তায় কৃষক

  চম্পক কুমার, জয়পুরহাট

১৬ মে ২০১৯, ২২:১৯
ধান
ধানের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না কৃষক (ছবি- দৈনিক অধিকার)

আকাশের কালো মেঘ দেখলেই মনের ভিতরে আঁতকে উঠছে জয়পুরহাটের কৃষকদের। গেল বছরের বন্যার আমন ধানের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ঋণ নিয়ে এবার বোরো আবাদ করেছিলেন কৃষকরা। বোরো আবাদের বাম্পার ফলন হলেও কয়েকদিনের ফণির আঘাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাই এই মুহুর্তে সময়মত ফসল ঘরে তোলা নিয়ে তৈরি হচ্ছে সংশয়। কারণ ধান কাটার জন্য মিলছে না পর্যাপ্ত শ্রমিক। আবার ফসলের ধানের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না কৃষকরা।

জয়পুরহাটের দিগন্তজোড়া মাঠে এখন সোনালী ধান আর ধান। ফলন ভাল হওয়ার পরও হাসি নেই কৃষকের মুখে। বন্যায় আমন ধানের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও ও মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে বোরো ধানের আবাদ করেছিলেন কৃষকরা। এরই মধ্যে ফণির আঘাতে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, তাই সম্পূর্ণভাবে ধান না পাকার আগেই জেলার বিভিন্ন মাঠে শুরু হয়েছে আধা-পাকা ধান কাটা মাড়াইয়ের কাজ। তবে এই সোনালী ধান ঘরে তুলতে প্রয়োজনীয় অনুপাতে শ্রমিক না পাওয়ায় দেখা দিয়েছে শ্রমিক সঙ্কট। আবার স্থানীয় শ্রমিক পাওয়া গেলেও মজুরি বেশ চড়া। এই শ্রমিক সঙ্কট আর মজুরি বেশি ও বৃষ্টির কারণে ধান কাটা মাড়াইয়ে অনেকটায় বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।

কৃষকেরা বলেন, এক বিঘায় জমির ব্যয় হচ্ছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা আর উৎপাদন হচ্ছে ২০ মণ। সেই সাথে প্রতি বিঘায় লোকসানের বোঝা বইতে হচ্ছে ১ থেকে ২ হাজার টাকা। তাছাড়া ধান ফলানোর জমিতে অন্য ফসল ফলানোও যায় না। আমরা ধানের ন্যায্য মূল্য না পেলে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ, ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ, সার ও কীটনাশকের টাকা পরিশোধ করতে পারব না। তাদের ইচ্ছে ছিল, ধান বিক্রি করে সেসব ধার-দেনা পরিশোধ করে বাকি ফসল দিয়ে সারা বছর সংসার চালাবেন। কিন্তু বাজারে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে উৎপাদন খরচের চেয়েও অনেক কম দামে। তাই সরকারিভাবে ধান ক্রয়ে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন তারা।

স্বপ্নের ধানের দাম নিয়ে হতাশ কৃষক (ছবি- দৈনিক অধিকার)

সরকারিভাবে দ্রুত ধান ক্রয় শুরু করা এবং সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনার দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন সংগঠন। ন্যায্য মূল্য না পেলে কৃষক আর ধানচাষে আগ্রহী হবে না বলে মনে করেন জেলা কৃষক ও ক্ষেতমজুর সংগ্রাম পরিষদের নেতারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক সুধেন্দ্র নাথ রায় দৈনিক অধিকারকে বলেন, এবার বোরো মৌসুমে আমাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ফলন বেশি হয়েছে। চাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২ লক্ষাধিক মেট্রিক ২ টন, আশা করা যায় কাটা শেষ হলে উৎপাদন তা ছাড়িয়ে যাবে। বর্ষা মৌসুমের আগেই আধা পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার পরামর্শ কৃষি বিভাগের।

চলতি মৌসুমে জেলায় বোরো ধানের চাষ হয়েছে ৭২ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে। এ পর্যন্ত ধান কর্তন হয়েছে ২৫ শতাংশ জমিতে। শ্রমিকের সহজলভ্যতায় ধান কাটা নিয়ে বিড়ম্বনার অবসান ঘটানোর পাশাপাশি ধানের বাজার মূল্য নিশ্চিত করা গেলে এবারের উৎপাদিত এ ধান এই জেলাসহ দেশের খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখতে অনেকটা সহায়তা করবে, এমনটি মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ওডি/এসএ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড