• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বাঁচার আকুতি জনির

  গাজীপুর প্রতিনিধি

১৫ মে ২০১৯, ২০:৪৪
ক্যান্সার
ক্যান্সারে আক্রান্ত জনি (ছবি : দৈনিক অধিকার)

বাইশ বছরের যুবক আশিকুল জামান জনি। এই বয়সে যেখানে সমবয়সী বন্ধুরা ঘুরে ফিরে পৃথিবীর আলো বাতাসের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে সেখানে তাকে মরণব্যাধী ক্যান্সারে বিছানায় শুয়ে বসে দিন পার করতে হচ্ছে।

গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের দিনমজুর সামাদ-মিনারা বেগম দম্পতির বড় সন্তান জনি। সে শ্রীপুর বীর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্র।

নিজের জমি নেই, অন্যের জমি চাষ করে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম দিনমজুর বাবা সহায় সম্বল হারিয়ে চিকিৎসার আংশিক কাজ শেষ করেছিলেন ছেলের। কিন্তু এখন আর কোন উপায় না পেয়ে মাঝ পথে থমকে গেছে জনির চিকিৎসা কার্যক্রম। অর্থের অভাবে জীবন প্রদীপ নিভে যেতে বসেছে জনির।

জনির বাড়ি গিয়ে দেখা যায় রাস্তা বিহীন একটি ছোট্ট জলাশয়ের পাশে তিন শতাংশ জমির উপর দুইটি ঘর। একটি জীর্ণ মাটির তৈরি দুই চালা ও একটি ছাপরা টিনের ঘর। ঘরের আসবাব বলতে একটি পুরনো খাট, চৌকি ও একটি আলনা। ঘরের মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তৈজসপত্র। জনির ক্যান্সার ধরা পড়ার পর থেকে দরিদ্র পরিবারের সুন্দর গোছানো সংসারের যে ছন্দ পতন হয়েছে তা বড়ই কষ্টের।

ক্যান্সারে আক্রান্ত জনি জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তার অণ্ডকোষে টিউমার ধরা পড়ে। অর্থের অভাবে তখনই টিউমারের চিকিৎসা করাতে পারেনি সে। ফেব্রুয়ারি মাসে সে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার হয়ে রাজধানী ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যায়। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অণ্ডকোষের টিউমারের অপারেশনের পর বায়োপসি রিপোর্টে কোলন ক্যান্সারের বিষয়টি ধরা পরে। তবে চিকিৎসকরা জানায় তার ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, ঠিকমত কেমোথেরাপি দিলে সুস্থ হয়ে উঠবে সে।

জনির বাবা জানান, ছেলের ক্যান্সার ধরা পরার পর থেকে বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে ধার দেনা করে এ পর্যন্ত জনির চিকিৎসায় প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছে তাকে মোট ছয়টি কেমোথেরাপি দিতে হবে। এর মধ্যে দুইটি কেমোথেরাপি দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি কেমো দিতে ওষুধ ও যাবতীয় খরচসহ প্রায় ৪০ হাজার টাকা প্রয়োজন, আবার দৈনিক ওষুধ কিনে দেওয়া লাগে। আমার যে পরিমাণ আয় তা দিয়ে সংসারই চলে না। এ দিকে ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছি। টাকার অভাবে এখন বন্ধ হওয়ার পথে ছেলের চিকিৎসা। তাই সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা করে ছেলেকে সপে দিয়েছি।

এ ব্যাপারে বরমী ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য নাজমুল আকন্দ রনি জানান, এলাকায় ছেলেটির ভাল সুনাম রয়েছে। সে খুব মেধাবী, তার দিন মজুর বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে পরিবারের অভাব ঘুচাবে। তার এ স্বপ্নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মরণব্যাধী ক্যান্সার। তার অসহায়ত্বের কথা বিবেচনা করে জনির চিকিৎসা বাবদ আমরা স্থানীয়ভাবে কিছু টাকা তুলে তার বাবার হাতে দিয়েছি যা চিকিৎসার তুলনায় খুবই সামান্য।

ওডি/এএসএল

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড