আরিফ হোসেন, বরিশাল
মুই তিরিশ বছর ধরে চরকা কাটি। মোর বাবাও এই কাম হরত। তয় পোলাপান আর এই কাম হরতে চায় না। আমহেরা আইছেন, এক গ্লাস খাঁটি ঘোল খাইয়া যান। ‘টাহা লাগবে না’।
কথাগুলো বলছিলেন- বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলসকাঠী ইউনিয়নের নিতাল চন্দ্র ঘোষের পুত্র দুলাল চন্দ্র ঘোষ। প্রায় ৩০ বছর পূর্বে নিজ বাড়ি ছেড়ে বসত গড়েন শ্বশুরবাড়ি বরিশালের চরমোনাইতে।
তবে এখনো ধরে রেখেছেন পৈত্রিক পেশা। চরমোনাই ব্রিজের ঢালে একটি চায়ের দোকানে বসে চরকা টেনে দুধ দিয়ে একে একে তৈরি করেন ঘি, ছানা, মাখম, ঘোল, টকদই যা একশত ভাগ খাঁটি। তৈরি করা উপাদানগুলো নিজেই বাড়ি বাড়ি ঘুরে বিক্রি করেন।
সভ্যতার যাতাকলে এখন হারিয়ে গেছে চরকা কাটা। সেখানে স্থান পেয়েছে ডিজিটাল মেশিনের চরকা। তবে ৩ মেয়ে ১ ছেলের জনক দুলাল চন্দ্র ঘোষ মৃত্যু পূর্ব পর্যন্ত এ পেশাতেই আঁকড়ে থাকতে চান।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দোকানের সামনেই একটি টিনের কাতিতে দুধ ঢেলে চরকা কাটছেন দুলাল ঘোঘ। হাঠৎ চোখে পড়ল দৈনিক অধিকার পত্রিকার সাংবাদিক আরিফ হোসেনের। পরে মোটরসাইকেলটি দোকানের সামনে দাঁড় করে জানতে চাইলেন তার জীবন কাহিনী।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ৩ মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি এই পেশায় থেকে। ১ ছেলেও বিয়ে করেছে। এখন আর জীবনে কিছু চাওয়ার নেই। ঘোষ পরিচয় নিয়ে মরে যেতে চাই। ছোট কাল থেকেই পরের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঘোল বিক্রি করতাম।
এখন বয়স ৫০ বছর হওয়ায় পা আর চলছে না। সমিতি থেকে কিস্তি তুলে বুড়ো বয়সে এই ব্রিজের নিচে একটা ছোট দোকান দিয়েছি। বাকি জীবনটা এখানেই কাটাতে চাই।
ওডি/আরবি
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড