ধনবাড়ী প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে সকালের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে পৌরসভার চৌরাস্তায় চোখে পড়ে এমন শত শত মানুষের সমাগম। আর এ সমাগমই হলো ‘শ্রমিক বেচা-কেনার হাট’। স্থানীয়দের ভাষায় এ হাটকে বলা হয় ‘কামলার হাট’। আবার অনেকে কৃষি শ্রমিকও বলে থাকে। ধনবাড়ীতে এখন চলছে আগাম জাতের বোরো ধান কাটা মৌসুম। এর পরপরই কাটা শুরু হবে অন্যান্য জাতের বোরো ধান। এ সময় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা কৃষি শ্রমিকরা পৌরসভার চৌরাস্তা বাজারে এসে ভিড় জমায়।
ধনবাড়ী চৌরাস্তায় শ্রমিক বেচা-কেনার হাট ঘুরে দেখা যায়, রাজশাহী, দিনাজপুর, রংপুর, নীলফামারী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, শেরপুর জেলাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে শ্রমিকরা এসেছেন কাজের সন্ধানে। এ মৌসুমে ধনবাড়ীতে কৃষি শ্রমিকের চাহিদা বেশি। সকাল সাড়ে পাঁচটা থেকে আটটা পর্যন্ত চলে এ হাট। কেউ বিক্রি হন একদিনের, কেউ পাঁচদিন, আবার কেউ সাত দিনের জন্য। দূর থেকে যারা এ হাটে আসেন তারা বেশি দিনের জন্য এবং স্থানীয় শ্রমিকরা প্রতিদিনের জন্য বিক্রি হন। একজন শ্রমিক ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা মজুরিতে কাজ করে।
ধনবাড়ী পৌরসভার এই হাটের শ্রমিকদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানায়, আমাদের এলাকায় এখন কাজ নেই। প্রতি পরিবারে ৮ থেকে ১০ জন সদস্যের জন্য উপার্জন করতে হয়। আর আমাদের উপার্জনেই চলে সংসার। প্রতি বছরই এ সময়ে শ্রমিকরা এ অঞ্চলে আসেন ধান কাটার জন্য। এক মাস কাজ করলে ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে বাড়িতে ফিরতে পারেন তারা।
কুড়িগ্রাম থেকে আসা সাজিদুল ইসলাম সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি। বাবা-মা, ভাই-বোনসহ পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৫ জন। আমার উপার্জনেই চলে সংসার। এসএসসির রেজাল্ট ভালো হলে ভর্তি হতে হবে কলেজে। ভর্তি হতেও লাগবে অনেক টাকা। একদিকে পরিবারের খরচ অন্যদিকে কলেজে ভর্তির টাকা সংগ্রহ করতে হবে।
ধনবাড়ী পৌর শহরের চৌরাস্তা বাজারে শ্রমিকের হাটে শ্রমিক ভাড়া করতে আসা মো. আজাহারুল ইসলাম জানান, এ বছর ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছি। জমি চাষ, ধানের চারা, সার, কীটনাশক, সেচ, পরিচর্যা এবং শ্রমিকের খরচ দিয়ে চাষাবাদ এখন আর লাভজনক হয় না। প্রতিদিন একজন শ্রমিককে মজুরি বাবদ দিতে হয় ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। পাশাপাশি তিন বেলা খাবার দিতে খরচ হয় ১৫০ টাকা।
ধনবাড়ী থানার ওসি মজিবর রহসান জানান, দূর দূরান্ত থেকে আসা কৃষি শ্রমিকরা সারাদিন বিভিন্ন এলাকায় কাজ করে রাতে টাকা নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ঘুমান। তাদের নিরাপত্তার জন্য চলতি একমাস পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।
ওডি/এসএএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড