ফেনী প্রতিনিধি
ফেনীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় গ্রেফতার সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকালে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইন এ আদেশ দেন।
এদিকে এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি শাহাদাত হোসেন শামীমের আরও তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এদিন বিকালে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহির হোসাইন এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গত ১৪ এপ্রিল (রোববার) একই আদালতে নুসরাত হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছিলেন শাহাদাত হোসেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মো. শাহ আলম জানান, নুসরাত হত্যা মামলার আরও তথ্য উদঘাটনে শাহাদাত হোসেন শামীমের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। যদিও এর আগে হত্যার দায় স্বীকার করে শামীম আদালতে জবানবন্দি দিয়েছিল।
গত ১২ এপ্রিল (শুক্রবার) সকালে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থেকে শাহাদাত হোসেন শামীমকে গ্রেফতার করে পিবিআই। শামীম নুসরাত হত্যা মামলার ৩ নম্বর আসামি। আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিনকে পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আজ আদালতে তোলা হয়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে গত ১৯ এপ্রিল (শুক্রবার) সোনাগাজী উপজেলার তাকিয়া রোড এলাকার নিজ বাসা থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিনকে আটক করে পিবিআই। পরদিন বিকালে তাকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শরাফ উদ্দিন আহম্মেদের আদালতে নিয়ে সাত দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে, গত ৬ এপ্রিল নুসরাতের গায়ে আগুন দেয়ার ঘটনার পর থেকেই আলোচনায় ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার সহসভাপতি রুহুল আমিন। অভিযোগের তীর বরাবরই তার দিকে থাকলেও প্রকাশ্যে কেউ অভিযোগ করতে পারেননি।
এখন পর্যন্ত নুসরাত হত্যা মামলায় আটজন আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। এরা হলেন- নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন, পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদাক মাকসুদ আলমসহ ২০ জনকে জনকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই।
প্রসঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি আলিম পরীক্ষা দিতে কেন্দ্রে গেলে তার গায়ে আগুন দেয়া হয়। গুরুতর অবস্থায় ওই দিন রাতে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মারা যান। এর আগে ২৭ মার্চ ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে নুসরাতকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন নুসরাতের মা। ওই মামলা তুলে নেয়ার জন্য নুসরাত ও তার পরিবারের ওপর চাপ দিচ্ছিল অধ্যক্ষের লোকজন। এরপর ৬ এপ্রিল নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
ওডি/এসএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড