কলারোয়া প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরা কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়িয়া গ্রামের আনছার আলীর ছেলে ৫ম শ্রেণির ছাত্র আব্দুল মোমিন (১২)। জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০১৮ প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া চেক ও উপজেলা-জেলা-বিভাগীয় পর্যায়ে প্রাপ্ত প্রাইজমানি নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন ১২০ নম্বর কোমরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ও সভাপতি মুনছুর আলী।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) শিক্ষার্থী আব্দুল মোমিনের পিতা আনছার আলী টাকা আত্মসাতের বিষয়টি লিখিত অভিযোগ আকারে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসককে জানিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, আব্দুল মোমিন ২০১৮ সালের আন্ত:প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ২০১৮-এর ১০০ মিটার দৌড়ে থানা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম স্থান এবং জাতীয় পর্যায়ে তৃতীয় স্থান অধিকার করে। গত ১৩ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আমার ছেলের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০১৮ প্রদান করেন। একই সাথে প্রধানমন্ত্রী তার হাতে একটি সার্টিফিকেট ও একটি চেক তুলে দেন। পরবর্তীতে আমার ছেলের কাছ থেকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ওই চেকের পিছনে জোর করে দুটি স্বাক্ষর করে চেকটি নিয়ে নেন। এর আগে একইভাবে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে পুরস্কার পাওয়া আরও ১৫ হাজার টাকা নিয়ে নেন তিনি। প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম আমার ছেলেকে বলেন, স্কুলে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এসব টাকা ও সার্টিফিকেট তোমার হাতে তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু আজও তা পায়নি।
গত ১৫ এপ্রিল আমি স্কুলে গিয়ে এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষকের কাছে চেকের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক উত্তেজিত হয়ে আমাকে মারতে যান।
এ সময় প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ও স্কুলের সভাপতি মুনছুর আলী হুমকি দিয়ে আমাকে বলেন, তোমার ছেলেকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হবে। বিষয়টি লোক জানাজানি হলে তোমার ছেলের আরও ক্ষতি হবে। আনছার আলী বলেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ও স্কুলের সভাপতি মুনছুর আলী আমার ছেলের এসব টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়েছে।
শিশু শিক্ষার্থী মোমিন বলেন, ‘আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পাওয়া চেকটি ফিরে পেতে চাই।’
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহীদুল ইসলাম জানান, মোমিনকে জেলা, বিভাগীয় পর্যায়ে কোনো টাকা দেওয়া হয়নি। জাতীয় পর্যায়ে তৃতীয় স্থান অধিকার করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মোমিনকে ১০ হাজার টাকার চেক দেন। মোমিনের পিতা আনছার আলী তাকে চেকটি ভাঙিয়ে টাকা তুলে আনতে বলেছিলেন। তিনি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে মোমিনের পিতার কাছে দিয়েছেন। মোমিনের পিতা আরও বলেন, ‘মোমিন প্রতিযোগিতার জন্য সাতক্ষীরা, খুলনা ও ঢাকা যাওয়া-আসার কোনো খরচ দেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ, খরচ আমি বহন করেছি। আমি খরচের টাকা চেয়েছি বলে তারা আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করছেন।’
তবে চেকটি কোন ব্যাংকে জমা ও কত তারিখে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘‘এটা আপনার জানার দরকার নেই।’
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল দৈনিক অধিকারকে বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি যথাযথ তদন্ত এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি।’
কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আর এম সেলিম শাহনেওয়াজ দৈনিক অধিকারকে বলেন, ‘এ বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
ওডি/আরবি
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড