• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ছয় উপজেলার সাথে লঞ্চ চলাচল বিচ্ছিন্ন : দ্রুত কাপ্তাই লেক ড্রেজিংয়ের দাবি

  এম.কামাল উদ্দিন, রাঙ্গামাটি

২৪ এপ্রিল ২০১৯, ১৭:২৭
কাপ্তাই
এশিয়া মহাদেশের বৃহৎ কাপ্তাই লেক

এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ কাপ্তাই লেকে নাব্যতার কারণে নৌ পথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। প্রতি বছরই লেকটিতে নাব্যতা দেখা দেয়। কিন্তু এবার অসহনীয়ভাবে কাপ্তাই হ্রদে নাব্যতা দেখা দিয়েছে। যার ফলে জেলার দুর্গম প্রত্যন্ত অঞ্চলের ৬টি উপজেলার সাথে নৌ পথের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে বিপাকে পড়েছে ভুক্তভোগী লঞ্চ যাত্রীরা। জানা গেছে, ওই ৬ উপজেলার যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হলো লঞ্চ। লঞ্চ বন্ধ হয়ে যাওয়াতে দুর্ভোগে পড়ছেন অসহায় গরিব লঞ্চ যাত্রীরা।

সাধারণ লঞ্চ যাত্রী মো. রাশেদ মিয়া ও মো. সাইদুল দৈনিক অধিকারকে বলেন, যাতায়াতের জন্য আমাদের একমাত্র ভরসা হলো লঞ্চ। তাই লঞ্চ বন্ধ হয়ে যাওয়া মানে আমাদেরও দুর্ভোগ বেড়ে যাওয়া। লঞ্চের সুবিধা কী আর অন্য যানবাহনে পাওয়া যাবে। যদিও লঞ্চগুলো অনেক পুরনো তারপরও ঠেকার কাজ তো চলে।

আমরা যারা লংগদু ও বাঘাইছড়িতে বসবাস করছি আমাদের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হলো লঞ্চ। একদিকে যেমন যাত্রীসেবা অন্য দিকে মালামাল বহন করতে সহজ। তারা বলেন, প্রতি বছর এই সময়ে কাপ্তাই হ্রদে নাব্যতা দেখা দেয়। কিন্তু এ নিয়ে কারও কোনো মাথা ব্যথা নেই বললেই চলে। তাদের দাবি কাপ্তাই হ্রদের চিহিৃত জায়গাগুলো সনাক্ত করে সে সব স্থানে জরুরিভাবে ড্রেজিং করা হউক। কাপ্তাই হ্রদ ক্যাপিটাল ড্রেজিং করা হলে দুইদিকে লাভ, এক হল হ্রদের নাব্যতা ফিরে পাবে ও মাছের উৎপাদন বেড়ে যাবে অন্য দিকে লঞ্চ চলাচলে বিঘ্ন ঘটবে না।

জেলা সদরের সাথে যে সব উপজেলার লঞ্চ চলাচল বন্ধ সে সব উপজেলাগুলো হল- বাঘাইছড়ি, লংগদু, নারিয়ারচর, বরকল, জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ি উপজেলা। এই ৬ উপজেলার লঞ্চ যাত্রীরা এখন মানবেতর জীবন-যাপন করছে। তাদের কষ্টের সীমা নেই। তারা এখন জেলা সদরের সাথে যাতায়াত করছে ছোট ছোট ইঞ্জিন বোট ও ভাড়ায় চালিত স্পিড বোট দিয়ে।

দৈনিক অধিকার

কাপ্তাই হ্রদে নাব্যতা

তবে ব্যয়বহুল দ্রুত যান স্পিড বোট দিয়ে সবাই যাতায়াত করতে পারছেনা। কারণ স্পিড বোটে খরচ বেশি। যারা একটু বৃত্তবান যারা, তারা স্পিড বোট দিয়ে যায়। আর যারা গরিব অসহায় তাদের রাত গুনতে হয় কোনো একটা কমদামি আবাসিক হোটেলে।

পরিবেশবাদী ললিত চাকমা বলেন, কাপ্তাই হ্রদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে জরুরি ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রয়োজন। কাপ্তাই হ্রদ দূষণ মুক্ত করা হলে নাব্যতার কবল থেকে কিছুটা রেহায় পাওয়া যেতে পারে। সম্প্রতি বিশাল কাপ্তাই হ্রদের পানি ব্যাপক হারে দূষিত হয়েছে। কাপ্তাই হ্রদে প্রতিদিন ব্যাপক হারে বর্জপাত পলিথিন ও ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে দিন দিন নাব্যতা বাড়ছে।

জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ দৈনিক অধিকারকে বলেন, কাপ্তাই হ্রদ ড্রেজিং করার ব্যাপারে সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। হয়তো খুব শীঘ্রই ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু হতে পারে। তিনি আরও বলেন, কাপ্তাই হ্রদ সম্পর্কে সকলের সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। এই হ্রদ এই এলাকার মানুষের সম্পদ। তাই এই সম্পদকে টিকিয়ে রাখা আপনাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা একটু সচেতন হলে হ্রদের দূষণ ও হ্রদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

রাঙ্গামাটি লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি মইন উদ্দিন সেলিম দৈনিক অধিকারকে বলেন, আমরা যারা লঞ্চ মালিক তারা বার বার বাংলাদেশ নৌ অভ্যন্তরীণ অধিদপ্তরকে লেক ড্রেজিং করার ব্যাপারে চিঠি লিখেছি। কিন্তু কে শুনে কার কথা। এছাড়াও স্থানীয় প্রশাসনকেও বারংবার অবগত করেছি। কেউ আমাদের ডাকে এ পর্যন্ত সাড়া দেয়নি।

কাপ্তাই লেকে নাব্যতা দেখা দিয়েছে আরও ৮ থেকে ১০ বছর আগে কখন থেকে আমরা নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়কে অবগত করেছি যেন দ্রুত লেকটি ড্রেজিং করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। তিনি বলেন,বিশেষ করে রাঙ্গামাটি জেলার জুরাছড়ি,বিলাইছড়িও বরকল এই তিন উপজেলার মানুষ জেলা সদরের সাথে যাতায়াতের একমাত্র অবলম্বন হল লঞ্চ। কিন্তু লঞ্চ বন্ধ হয়ে যাওয়াতে বিপাকে পড়েছে ওই উপজেলার লোকজন।

ওডি/আরবি

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড