শামীম খান, মহেশপুর প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহের মহেশপুরে উপজেলায় গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে বলে জানায় কৃষকরা। মাঠের পর মাঠ জুড়ে এখন বোরো ধানের হিল্লোল।
আগাম জাতের ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে। তবে কৃষকদের এখন একমাত্র ভয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এ থেকে রক্ষা পাওয়া গেলে তাদের কষ্টের ফসল ঘরে তুলতে পারবে।
এ দিকে ধানের বাম্পার ফলন হলেও দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। ধানের উপযুক্ত মূল্য না হলে আগামীতে ধান চাষ ব্যাহত হবে বলে মনে করছে তারা। সরকার কেজিতে ২৬ টাকা বিক্রয়মূল্য বেঁধে দিলেও এ ধান প্রকৃত কৃষকরা গোডাউনে দিতে পারবে কি না এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ২০ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ১৫০ হেক্টর বেশি। গত মৌসুমে বোরো ও আউশ ধানের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবার অনেক বেশি বোরো আবাদ করা হয়েছে। আর ফলন দেখেও মনে হচ্ছে বাম্পার ফলন হবে। তবে এখন কৃষকের একমাত্র আশঙ্কা প্রাকৃতিক বিপর্যয়। তা থেকে রক্ষা পেলে তারা সোনালী ধান ঘরে তুলতে পারবে।
উপজেলার- নেপা, ভৈরবা, যাদবপুর, পাতিবিলা, জাগুসা, গারাবাড়িয়া, মান্দাতলাসহ বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত বছর বীজ সংকট ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ধান উৎপাদন এবারের চেয়ে প্রায় অর্ধেক কম হয়েছিল।
পাতিবিলা গ্রামের কৃষক সাগর ইসলাম জানান, ২ বিঘা জমিতে এবারে বোরো ধান চাষ করা হয়। ইতোমধ্যে ১০ কাঠা জমির আগাম স্থানীয় বি-২৮ জাতের ধান কাটা হয়েছে। ধানের ফলন অত্যন্ত ভালো।
একইভাবে গাড়াবাড়িয়ার মকবুল হোসেন জানান, জমির ধান বেশিরভাগ পেকে গেছে, ধানের ফলন গত কয়েক বছর থেকে ভালো। তবে সব জিনিসের দাম বেশি হবার কারণে শ্রমিকের দামও বেড়ে গেছে। ফলে ধানের ন্যায্য মূল্য না পেলে পুষাবেনা।
বোরো ধান কাটছে শ্রমিকরা ( ছবি : দৈনিক অধিকার )
এ দিকে সরকার ২৬ টাকা কেজিতে বিক্রয়মূল্য বেঁধে দিলেও এ ধান প্রকৃত কৃষকরা গোডাউনে দিতে পারবে কি না এ নিয়ে প্রশ্ন কৃষকের মুখে মুখে। বর্তমানে এলাকায় ধানের মূল্য ৬৫০/- টাকা। এক বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করতে ১৪/১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। শ্রমিকসহ উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষকের লাভ না হয়ে লোকসান গুণতে হচ্ছে।
কৃষকরা অভিযোগ করেন, সরকারিভাবে ধানের দাম মণ প্রতি এক হাজার ৪০ টাকা নির্ধারণ হলেও এ ধান কৃষকরা গোডাউনে দিতে পারে না। অধিকাংশই দেখা যায় সরকারি দলের ছত্রছায়ায় এক দল সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী দেদারছে গোডাউনে ধান নিয়ে যায়।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আবু তালহা বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। আগাম জাতের ধান কাটা থেকে যে ফলন পাওয়া গেছে তা অতীতের চেয়ে অনেক বেশি বলে মনে করেন তিনি।
ওডি/এসএএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড