নিখোঁজের ২ মাস পর মিলল কলেজ ছাত্রের লাশ

হবিগঞ্জের লাখাইয়ে নিখোঁজের দুই মাস পর উজ্জ্বল মিয়া (২২) নামে এক কলেজ ছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকালে উপজেলার মেন্দির হাওরে একটি পুকুর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহত ছাত্র উজ্জ্বল মিয়া মুড়াকরি গ্রামের শাহ আলমের ছেলে। সে মাধবপুর সৈয়দ সাঈদ উদ্দিন কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

এ ঘটনায় একই উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের মঞ্জু মিয়া ও তার মেয়ে ফারজানা আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ। তারা পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। হত্যার বিষয়টি সোমবার সন্ধ্যায় থানা চত্বরে নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লাহ।

পুলিশ সুপার আটককৃতদের বরাত দিয়ে জানান, মঞ্জু মিয়ার মেয়ে ফারজানা আক্তার হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। নিহত উজ্জ্বল মিয়া মাধবপুর সৈয়দ সাঈদ উদ্দিন কলেজে পড়াশোনা করে। ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ফলে উজ্জ্বল মাঝে মাঝে ফারজানা আক্তারের বাড়িতে আসা যাওয়া করত। তাদের মধ্যে দৈহিক সম্পর্কও গড়ে উঠে। এদিকে উজ্জ্বল একাধিক মেয়ের সঙ্গে প্রেম করতো। ফেব্রুয়ারি মাসে ফারজানার বাবা মা ঢাকা যান। এ সুযোগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি তার বাড়িতে যায় উজ্জ্বল। ওই রাতে তারা দৈহিক সম্পর্কে মিলিত হয়।

এ সময় উজ্জ্বলের অপর এক প্রেমিকা ফোন দিতে থাকে। কিন্তু সে ফোন রিসিভ না করায় ম্যাসেজ দেয়। সেটি দেখতে পেয়ে ফারজানা প্রথমে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে উজ্জ্বলকে হত্যার পরিকল্পনা নেয়। ওই রাতেই ঘরে থাকা মসলা বাটার সিল দিয়ে উজ্জ্বলের মাথায় আঘাত করে সে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয়। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর লাশ বস্তায় ভরে ঘরের মেঝে খুঁড়ে পুঁতে রাখে। পরদিন ঢাকায় গিয়ে বাবা মাকে বিষয়টি জানায়। তারা ঢাকা থেকে এসে তার বাবা লাশ নিয়ে মেন্দি হাওরে পুঁতে রাখেন।

এ ঘটনায় ২৬ ফেব্রুয়ারি উজ্জ্বলের বাবা থানায় একটি জিডি করেন। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপারের তত্ত্বাবধানে তদন্ত শুরু হয়। ২১ এপ্রিল ফারজানা ও তার বাবা মঞ্জু মিয়াকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এক পর্যায়ে ফারজানা ঘটনা স্বীকার করে। তার বাবা মঞ্জু মিয়াও পরে বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে সোমবার বিকালে হাওর থেকে উজ্জ্বলের লাশ উদ্ধার করা হয়। তার বাবা শাহ আলম ছেলের লাশ সনাক্ত করেছেন।

ওডি/এএসএল