কুলেন্দু শেখর দাস, সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জের হাওরে কৃষি শ্রমিক সঙ্কটের কারণে বোরো ধান কাটা ব্যাহত হচ্ছে। প্রতি বছরের তুলনায় চলতি বোরো মৌসুমে দেশের উত্তরাঞ্চলসহ বেশ কয়েকটি জেলা থেকে এবার ধান কাটার শ্রমিক দল কম এসেছেন। চাহিদা অনুযায়ী শ্রমিক না থাকায় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা।
চৈত্রের প্রচণ্ড তাপদাহে কিছু জমিতে চিটা, কাল বৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে উঠতি বোরো ফসল আংশিক ক্ষতি হলেও মাঠ ভরা পাকা ধান নিয়ে এখন চরম সংশয়ে রয়েছেন কৃষকরা। সময়মতো ফসল ঘরে তোলার নিয়ে এখন চিন্তার ভাঁজ কপালে।
হাওর এলাকা ঘুরে কৃষক ও গৃহস্থদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চৈত্রের খড়ায় আংশিক ধানে চিটা হওয়ায়, গড়ে চার আনা ফসল নষ্ট হয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার ফলন মোটামুটি ভালো হলেও ধান কাটার শ্রমিক খুব কম এসেছেন। প্রত্যেক গৃহস্থের কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ জন ধান কাটার শ্রমিক প্রয়োজন। সেখানে অনেকই এবার শ্রমিক না পাওয়ার কারণে একজন গৃহস্থের শ্রমিককে ভাগ করে অন্যজন ধান কাটাচ্ছেন। অনেকে শ্রমিক না পেয়ে নিজেরাই কিছু ধান কাটছেন এতে লাভের চেয়ে লোকশানের পরিমাণ বেশি হচ্ছে।
কৃষি শ্রমিক হারুন মিয়া বলেন, আমরা তো সারা বছর কাম (কাজ) করতে পারিনা বৈশাখ মাসে যে রোজি করি বউ-বাচ্চা নিয়া খাই, এই সময় ৫-৬ টাকা রোজ পড়ে।
ময়মনসিংহ থেকে আসা ধান কাটার শ্রমিক সর্দার ঠান্ডু মিয়া ( ঠান্ডু বেপারী ) জানান, তার নেতৃত্বে প্রতিবছরই ৩০-৩২ জনের একটি দল জামালগঞ্জের পাকনা হাওরে আসেন একজন (কৃষক) মহাজনের ধানী জমি কাটতে। কিন্তু এবার তিনি কয়েক জন কৃষকের ধান কাটছেন উপদলে বিভক্ত হয়ে। এতে তাদের কোনো রকম কমতি না হলেও, কৃষকদের (গৃহস্থ) কৃষি জমি থেকে সময়মতো ফসল ওঠছে না।
এ দিকে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, হাওরের ধান কাটার শ্রমিক সঙ্কট নিরসনে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এ জন্য জেলার ফাজিলপুর, যাদুকাটা নদীসহ বিভিন্ন বালু-পাথর কোয়ারিগুলোতে ফসল কাটা পর্যন্ত বালু-পাথরের কাজ আপাদত বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. বশির আহমদ সরকার জানান, সুনামগঞ্জের ২ লাখ ২৪ হাজার ৭১৯ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৭৯২ মেট্রিক টন ধান। টাকার অঙ্কে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। বোরো ফসলের ফলন ভালো হয়েছে। প্রায় ২৫ ভাগ জমির ধান পেকে গেছে। কিছু দিনের মধ্যে বাকি জমির ধানও পেকে যাবে। ধান পাকা শুরু করলেও শ্রমিক সঙ্কটের কারণে ধান কাটতে পারছেন না কৃষকরা।
ওডি/এসএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড