• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

নুসরাত হত্যায় ওসি মোয়াজ্জেমের গাফিলতি ছিল : পুলিশ

  ফেনী প্রতিনিধি

১৯ এপ্রিল ২০১৯, ০৬:৫০
নুসরাত হত্যাকাণ্ড
নুসরাত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন ডিআইজি শেখ মো. রুহুল আমীন। (ছবি : দৈনিক অধিকার)

প্রশাসনের কর্মকর্তারা সময় মতো যথাযথ ব্যবস্থা নিলে ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাতকে অকালে বিদায় নিতে হতো না বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশ সদর দপ্তরের তদন্ত দলের প্রধান ডিআইজি (মিডিয়া) শেখ মো. রুহুল আমীন। তিনি বলেন, ‘সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় প্রশাসনের গাফিলতি ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখতে ইতোমধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের করা পাঁচ সদস্যের সেই কমিটিটি গত দুদিন যাবত সোনাগাজীতে তদন্ত করছেন।’

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কমিটির প্রধান ডিআইজি (মিডিয়া) শেখ মো. রুহুল আমীন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও মাদ্রাসা কমিটি যদি ২৭ মার্চের ঘটনার পর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন তাহলে ০৬ এপ্রিলের নির্মম ঘটনাটি এড়ানো যেতো।’

নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি রুহুল আমীনের জড়িত থাকার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পুলিশের এই ডিআইজি বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক না কেন, যত বড় ক্ষমতাধরই হোকনা কেন সবার বিরুদ্ধেই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও সুস্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে।’

এদিকে সোনাগাজী মডেল থানার সাবেক ওসি মো. মোয়াজ্জেম হোসেনের দায়িত্বে অবহেলার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তার সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা সোনাগাজীর বিভিন্ন মহল, মাদ্রাসা শিক্ষক এবং নুসরাতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রাথমিকভাবে এ ঘটনায় ওসির গাফিলতি ছিল বলেই তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।’

‘এ বিষয়ে আমরা সামনে আরও বিস্তারিত খোঁজ খবর নিচ্ছি। তদন্তে ওসির দায়িত্ব অবহেলা প্রমাণিত হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

অপরদিকে জেলার এসপি এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকারের দায়িত্বে অবহেলার ইস্যুতে জানতে চাইলে ডিআইজি রুহুল আমীন বলেন, ‘আমরা সোনাগাজীতে তদন্তে কাজ করেছি, আজ শুক্রবার ফেনীতেও কাজ করব। তদন্তের পরে আমরা এ বিষয়ে বলতে পারব। এখনো স্পষ্ট কিছু বলা যাচ্ছেনা।’

সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ (বরখাস্ত) সিরাজউদ্দৌলা প্রসঙ্গে ডিআইজি রুহুল বলেন, ‘তিনি (সিরাজউদ্দৌলা) অনেক আগে থেকেই এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।’

‘যারা দায়িত্বশীল ছিলেন তারা যদি আগেই ব্যবস্থা নিতেন তাহলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতো না। সিরাজউদ্দৌলার সমর্থকেরাই এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। তাছাড়া কমিটির অনেকেই এর সঙ্গে নানাভাবে জড়িত।’

পিবিআইয়ের তদন্ত প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পিবিআইয়ের তদন্তে যদি ক্ষমতাধর কারও নাম আসে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ফেনী জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের তদন্তের দায়িত্ব গ্রহণের তিন দিন পর পিবিআইয়ের প্রধান বনজ কুমার মজুমদার প্রাথমিক তদন্তের বিষয়গুলো উল্লেখ করে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বরাবর একটি প্রতিবেদন পেশ করেন। সেখানে স্থানীয় ওসিসহ প্রশাসনের গাফিলতির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসায় আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির শ্লীলতাহানি ও উক্ত ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়। যদিও পরবর্তীতে সেই মামলা তুলে না নেওয়ায় পরের ৬ এপ্রিল মাদ্রাসার পরীক্ষা কেন্দ্রে রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে।

আরও পড়ুন :- সুজনের গণস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে নুসরাতের ভাইয়ের আর্তনাদ

এসব ঘটনায় পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি ও ফেনীর এসপির বিরুদ্ধে নিজেদের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ উঠে। মূলত এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৯ এপ্রিল ওসি মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়। তাছাড়া এই অভিযোগের বিষয়গুলো তদন্তে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করে ঢাকার পুলিশ সদর দপ্তর।

ওডি/কেএইচআর

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড