• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

প্রকল্পে শ্রমিকের কাজ করার কথা থাকলেও তা মানছেন না ঠিকাদার

  কাজী কামাল হোসেন, নওগাঁ

০২ এপ্রিল ২০১৯, ১৫:২৬
এক্সাভেটর মেশিন দিয়ে খনন
এক্সাভেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে খনন করা হচ্ছে ( ছবি : দৈনিক অধিকার )

নওগাঁয় মৎস্য অধিদপ্তরের আরডি প্রকল্পের আওতায় জলাশয় সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি নীতিমালায় পুকুর/দিঘি/দহের খননের কাজ স্থানীয় শ্রমিক দিয়ে করার কথা বরাদ্দ পত্রে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার শ্রমিক দিয়ে কাজ না করে মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তাদের যোগসাজসে এক্সাভেটর (ভেকু) মেশিন দ্বারা কাজ করছেন। এ নিয়ে স্থানীয় গরিব দিনমজুর শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রমিকের নাম দেখিয়ে ভুয়া মাস্টাররোল তৈরি করে বিল ভাউচার করছেন ঠিকাদার। কাজ করতে গিয়ে সরকারি নীতিমালা অমান্য করাসহ শিডিউল মানা হচ্ছেনা বলে অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। বিষয়টি দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এক্সাভেটর (ভেকু) মেশিন দ্বারা কাজ বন্ধের ও প্রকল্পের কাজে হরিলুট বন্ধ করে সুষ্ঠুভাবে খনন কাজ সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় শ্রমিকরা।

নওগাঁ মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ সদর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের সরাইল মৌজার ঘুলির দহের সংস্কার কাজে ৭ লাখ ৯০ হাজার, বৈঠাখালীদহ পুকুর (১) ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা, বৈঠাখালী পুকুর (২) ১২ লাখ ৫০ হাজার সরাইল, জেলার বদলগাছী উপজেলার কাস্টগাড়ী মৌজার সর্বমঙ্গলা পুকুর সংস্কার কাজে ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা, খাদাইল মৌজার সিংড়াডোবা পুকুর ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা, বেগুনজোয়ার মৌজার কৃষ্ণপুকুর ও চন্দনপুকুরে ১৪ লাখ ৩২ হাজার টাকা, পত্নীতলা উপজেলার বাবনাবাজ মৌজার বেলপুকুর ৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা, দোছাই মৌজার কামাড়াপুকুর ৪ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, চকখৈল মৌজার তিতিহার পুকুর ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ধামইরহাট উপজেলার কাশিপুর মৌজায় গুচ্ছগ্রাম পুকুর ১৭ লাখ টাকা, আগ্রাদ্বিগুন মৌজার আকলাহার পুকুর ১১ লাখ টাকা, বড়দুশমিতা পুকুর ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা, নলাপুকুর ১৪ লাখ টাকা, বড়পুকুর ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা ও ধাপের পুকুর ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা জলাশয় সংস্কার কাজে ব্যয় করা হবে। প্রতিটি কাজে দৈনিক গড়ে ১০০ জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও ভূয়া মাস্টাররোল তৈরি করে বিল ভাউচার বিল উত্তলোন করা হচ্ছে।

প্রকল্পের স্থানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নওগাঁ সদর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের সরাইল ঘুলিরদহের সংষ্কার কাজে শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর কথা থাকলেও তা না করে এক্সাভেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে কাজ করছে ঠিকাদাররা।

উল্লেখিত স্থানে কাগজে-কলমে ১০ ফিট খনন করার কথা থাকলেও তা না করে মাত্র ১ থেকে ২ ফিট খনন করা হচ্ছে। অন্যদিকে, কোনো কোনো পুকুরে পানি থাকাও সত্ত্বেও সেই খনন কাজ না করে পিড়ি ওয়ার্ক দেখানো হচ্ছে। প্রকল্পের সাইনবোর্ডে কাজ শুরুর তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি এবং কাজ সর্ম্পন্ন করার কথা রয়েছে ৩১ মার্চ।

সরাইল গ্রামের স্থানীয় শ্রমিক মো. সাহিদ হোসেন বলেন, আমরা এলাকার দিন মজুর এই কাজগুলো আমাদের দিয়ে করানোর কথা কাগজপত্রে উল্লেখ থাকলেও তা না করে এক্সাভেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে কাজ করছেন ঠিকাদার। প্রতিদিন ১০০ জন শ্রমিক কাজ করার কথা কিন্তু ভুয়া নাম ব্যবহার করে টাকা উত্তলোন করছে ঠিকাদার। যার কারণে আমরা কাজ শূণ্য হয়ে পড়েছি।

আরডি প্রকল্পের ঠিকাদার একছাদ আলীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আসলে শ্রমিক দিয়েই কাজ করানোর কথা। কিন্তু ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ করলে কাজগুলো দ্রুত শেষ করা যায়। আমাদের লাভের বিষয়টাও দেখতে হবে আর শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হলে তা সময়ের ব্যাপার।

এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, প্রকল্পে শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর কথা আছে। কিন্তু কাজগুলো সঠিক সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে ভেক্যু মেশিন দিয়ে করতে হচ্ছে। তাছাড়া আরও অনেক বিষয় থাকে যা আমাদের মেনে চলতে হয়।

ওডি/এসএএফ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড