আমিরুল ইসলাম, নাটোর প্রতিনিধি
জীবনবাজী রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন সন্তোষ সরকার। মুক্তি নম্বর এবং মুক্তিবার্তায় নামও উঠেছিল তাঁর। কিন্তু তদবির না করায় গেজেটভুক্ত হতে পারেননি তিনি। সেই আক্ষেপে ইহলোক ত্যাগ করেন তিনি। সেটাও ১০ বছর আগে। এখন পরিবারের দাবি মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃতির। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের সিধুলি গ্রামে ওই মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি।
মুক্তিযোদ্ধা সন্তোষ সরকারের বড় ছেলে সনাতন সরকার দাবি করেন, তাঁর বাবা বঙ্গবন্ধুর ডাকে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তখন অনেক ছোট তিনি। মুক্তিযুদ্ধ থেকে ফিরে এসে তাঁর বাবার মুখে শুনেছেন তিনি পাবনার চাটমোহর উপজেলা এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেনের নেতৃত্বে যুদ্ধ করেছিলেন। এছাড়া ও মুক্তিযোদ্ধা সামসুজ্জোহা, জাফর মিয়া, জীবন সরকার ও চাঁদ মোহাম্মদ তার বাবার সহযোদ্ধা ছিলেন।
আরও পড়ুন : বেঁচে থাকতেই স্বামীর বীরত্বের স্বীকৃতি চান স্ত্রী
মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বঞ্চিত সন্তোষ সরকারের পরিবার সূত্রে জানাগেছে, দেশ স্বাধীনের পর স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগীতায় তিনি মুক্তিযোদ্ধা আইডি (নম্বর- ০৫০৬০৩০০২৬) ও মুক্তিবার্তা (নম্বর-০৩০৪০৫০০০১) নামও উঠেছিল তাঁর। পরে তদবির না করায় গেজেটভুক্ত হতে না পারায় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাননি তিনি। এ আক্ষেপ নিয়েই ২০১০ সালে মারা যান তিনি।
বঞ্চিত সন্তোষ সরকারের স্ত্রী সাধনা সরকার আক্ষেপ করে বলেন, তাঁর স্বামী জীবনবাজী রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে নির্যাতনে শিকার হয়েছিলেন। কিন্তু গেজেটভুক্তির জন্য তদবির না করায় স্বীকৃতি পাননি। বেঁচে থেকেও স্বীকৃতি না পেয়ে ক্ষোভে-দুঃখে মারা যান তিনি। এখন মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি নিয়ে পরিবার নিয়ে গৌরবের সাথে বাঁচতে চান তিনি।
আরও পড়ুন : জীবনের শেষ প্রান্তে তারা; আর কত দেরি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি?
গুরুদাসপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের ডেপুটি মুক্তিযোদ্ধা মো. ফারুক হোসেন, অ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন ও সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার চাঁদ মোহাম্মদ বলেন, সন্তোষ সরকার তাঁদের সাথে ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ফিরে এসে গুরুদাসপুর থানায় ঢুকে পাকিস্তান সমর্থিত পুলিশদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করেন একই সাথে গুরুদাসপুর-আহম্মেদপুর সড়কের সোনাবাজুতে তুলসীগঙ্গা নদীর ওপর সোনাবাজু ব্রিজ উড়িয়ে পাক হানাদার ঠেকিয়েছিলেন তিনি। পরে সম্মিলিতভাবে তাঁরা পাবনার চাটমোহর ও হান্ডিয়াল এলাকায় পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহন করেছিলেন।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মুক্তিযোদ্ধা আইডি ও মুক্তিবার্তায় নামও উঠেছিল। তবে কেন কী কারনে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত হতে পারেননি এটাই একটা প্রশ্ন। তবে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সন্তোষ সরকারের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত বলে মনে করেন তাঁরা।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড