• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কুড়িগ্রামে নবজাতকের মৃত্যুকে ঘিরে চাঞ্চল্য

  কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

১৯ মার্চ ২০১৯, ২০:২২
কুড়িগ্রাম
গ্রীণ লাইফ হাসপাতালে নবজাতকের মৃত্যুকে ঘিরে তোলপাড়

কুড়িগ্রামে বেসরকারি গ্রীণ লাইফ হাসপাতালে নবজাতকের মৃত্যুকে ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এনিয়ে খবর সংগ্রহ করতে গেলে হাসপাতালে বাঁধা সৃষ্টি করে প্রভাবশালীরা। সাংবাদিকদের সাথে চলে বাক-বিতন্ডা।

এই ফাঁকে রোগীর স্বজনদের তারা হাসপাতাল থেকে অটোতে জোড় করে বের করে দেয়া হয়। পরে স্বজনরা সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, অপারেশনের সময় নবজাতককে মেরে ফেলা হয়। অপরদিকে হাসপাতাল কতৃপক্ষ জানায়, শিশুটি প্রতিবন্ধী ছিল। তার সঠিক গ্রোথ হয়নি।

হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্র জানায়, লালমনিরহাট জেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের রতিধর চৌধুরী পাড়া গ্রামের বলরাম চন্দ্র রায় (৪২) এর গর্ভবতী স্ত্রী লক্ষ্মীরানী (২৬) এর পেটে ব্যাথা উঠলে তাকে সোমবার রাত ১১টায় কুড়িগ্রাম শহরের বেসরকারি গ্রীণ লাইফ হাসপাতালে জরুরীভাবে ভর্তি করা হয়। সাথে সাথেই তাকে ওটিতে নেয়া হয়। চল্লিশ মিনিট পর জানানো হয় সিজার হয়েছে। বাচ্চা প্রতিবন্ধী। পিছনে পা বের হয়েছে। সে বিকলাঙ্গ। তার মরদেহ কার্টুনে রাখা হয়েছে। রোগীর স্বজনরা বন্ধ প্যাকেট খুলে দেখেন নবজাতকের পেট কাটা বাইরে নাড়িভুরি বের হয়ে আছে। হাত-পা সব ঠিক আছে। ফলে তাদের মনে সন্দেহ হয়। এনিয়ে তারা প্রতিবাদ করলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের কথা কানে তোলেনি।

এ ব্যাপারে লক্ষ্মী রানীর দেবর প্রণব চন্দ্র রায় ওরফে পাভেল জানান, আমি বৌদিকে রাত ১১টার দিকে নিয়ে আসার সাথে সাথে তাকে অপরেশনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। চল্লিশ মিনিট পর আমাকে নার্স ঔষধ আনতে বলেন। আমি ঔষধ নিয়ে এসে জানতে পারি সিজার কমপ্লিট হয়েছে। বাচ্চা প্রতিবন্ধী। মারা গেছে।

পরে রাত তিনটার দিকে আমি কার্টুন খুলে দেখি বাচ্চার পেট কাটা নাড়িভুরি বের হয়ে গেছে। আমি হাত-পাগুলো ঠিকঠাক করে দেখি সেগুলো ঠিক আছে। মঙ্গলবার সকালে আমি বিষয়টি ডাক্তারকে জানালে তারা উল্টাপাল্টা উত্তর দেন। আমরা গরীব মানুষ কিবা করতে পারি। তিনি আরও জানান আমি চিৎকার-চেঁচামেচী করার পর। আমাকে দ্রুত হাসপাতাল ত্যাগ করতে বলা হয়।

পরে সাংবাদিকদের সাথে আমাকে কথা বলতে দেয়া হয়নি। তারা আমাকে অটোতে তুলে সেই অটোতে হাসপাতালের লোক তিন কিলোমিটার পর্যন্ত সাথে যায়। যাতে কারো সাথে কথা বলতে না পরি। পরে তারা ত্রিমোহণী থেকে ফিরে আসে। আমরা এই হত্যার বিচার চাই।

লক্ষ্মীরানীর স্বামী বলরাম চন্দ্র রায় জানান, আমি তিন বছর হয় বিয়ে করেছি। এটা আমাদের প্রথম সন্তান ছিল। ঢাকার মাওনা চৌরাস্তায় একটি বাটন ফ্যাক্টরীতে চাকরী করি আমি। ছুটি না পাওয়ায় ছোট ভাইকে দিয়ে স্ত্রীকে পরিচিত ডাক্তারের মাধ্যমে সেখানে ভর্তি করি। আমাকে রাত ১২টায় প্রতিবন্ধী শিশু জন্ম হয়েছে বলে জানানো হলেও পরে জানতে পারি আমার সন্তান মারা গেছে। তিনি আরও বলেন, আমরা আলট্রাসনোগ্রাম করেছি। কিন্তু কেউ বলেনি বাচ্চা বা বাচ্চার মায়ের কোন সমস্যা রয়েছে।

এ ব্যাপারে ওই হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডা. অমিত কুমার রায় নিজে সিজার করার বিষয়টি স্বীকার করে এই প্রতিবেদককে জানান, বাচ্চাটির এবডোমিনাল ওয়াল তৈরী হয়নি। যাকে চিকিৎসার ভাষায় ওম ভেলোসিল বলা হয়। তার পেটের নাড়িভুরি সঠিক পরিপক্কতা না আসায় এ সমস্যা তৈরি হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে সিভিল সার্জন ডা. এসএম আমিনুল ইসলাম জানান, আমি এই মাত্র আপনার কাছ থেকে বিষয়টি জানলাম। এ ব্যাপারে আমাকে কেউ অবগত করেনি বা কোন ধরণের অভিযোগ নিয়ে আসেনি।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড