কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
আর পারি না বাহে ক্যামনে সংসার চলামু। দু’বেলা দু’মুঠো ভাত খামো তারে জন্যে সারাদিন বসি থাকোং কাং কোন বেলা লোহার জিনিস বানায় এমটাই অশ্রুসিক্তভাবে বলেছেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর কামার শিল্প (কামার) সোলায়মান।
যারা দীর্ঘদিন থেকে কামার শিল্পে কাজ করেছেন তারাই চল্লিশ পঞ্চাশ বছর যাবত ধরে রেখেছেন এই শিল্প। কোরবানি ঈদে তাদের দাপট বাড়লেও সারা বছর থাকেন অনেকটা অবহেলিত। আগুন লোহা আর হাতুড়ির পিটুনিতে তৈরি দা, খুরপি, বটি, কুড়াল, হাতুড়ি, নিড়ানী, কাস্তে, ছুরি, খন্তা সারা বছর তৈরি করে থাকেন। কারখানার তৈরি এসব পণ্য সরবরাহ থাকায় তারা আগের চেয়ে অনেক কম বানাতে পারেন।
আগুন লোহা আর হাতুড়ির পিটুনির টুক-টাক শব্দের মতো ধুকে ধুকে চলে তাদেও সংসারের চাকা। উপজেলার বালারহাট বাজারের কামার সোলায়মান (৭২) জানান, তার শরীর আগের মতো চলে না। শরীর না চললেও পেশাও পাল্টাতে পারেন না, তাই বাধ্য হয়ে কাজ করছেন তিনি।
লোহার দাম বাড়ায় পণ্যের দামও বেড়েছে। তিনি জানান দিনে ৪শ থেকে ৫শ টাকা আয় হয়। উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়ের পশ্চিম ধনিরামের বাঘখাওয়ার চর গ্রামের মৃত আমজাদ মুনসীর ছেলে কাসেম আলী ৪০ বছর ধরে কামারশিল্পে কাজ করছেন। হাতুড়ি পিটিয়ে জীবন চলে তার। সারাদিন হাতুড়ি পিটিয়ে আয় হয় ৩শ থেকে ৫শ টাকা।
কাসেম আলী বলেন, মানভেদে নতুন দা ২শ থেকে ৩শ টাকায়, ছুরি ১শ থেকে ২শ টাকায় এবং বটি ৩শ থেকে ৬শ টাকায় বিক্রি হয়। কামারদের হাতে তৈরির পণ্য মজবুত ও টেকসই হয়। কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় বাজারে চাহিদা অনেক কম। কারখানার তৈরি পণ্য বেশি মজবুত না হলেও দেখতে সুন্দর হওয়ায় ক্রেতাদের কাছে চাহিদা অনেক বেশি। সংসারে তাদের বাড়ি ভিটা ছাড়া তাদের আর কোনো আবাদী জমি-জমা নাই। হাতুড়ি পিটিয়ে সংসার চলে সোলায়মানদের।
এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী নাঙডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান ও বড়ভিটা ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হলো তারা জানান, আমরা যতটুকু পারি রিলিফ-স্লিপ দিয়ে সহযোগিতা করে থাকি। সরকারিভাবে কোনো প্রকারের তাদের জন্য সুযোগ সুবিধা না থাকায় তারা কষ্টে সংসার চালায়।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড