অধিকার ডেস্ক
কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরামুল হককে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী আয়েশা বেগম। বৃহস্পতিবার কক্সবাজার প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
একরামের মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠবিচার দাবি করেন আয়েশা। এ সময় তার দুই মেয়ে তাহিয়া হক ও নাহিয়ান হকসহ স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে একরামের স্কুলপড়ুয়া দুই মেয়ের আহাজারিতে সাংবাদিকরাও চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।
এ সময় মাকে জড়িয়ে হাউমাউ করে চিৎকার দিয়ে কেঁদেছে একরামের দুই মেয়ে। চিৎকার দিয়ে বলেন, ‘আমার আব্বুকে হত্যা করা হয়েছে। আব্বুকে হত্যার বিচার চাই। আব্বু ছাড়া কে আমাদের স্কুলে নিয়ে যাবে। আমরা কাকে আব্বু বলে ডাকবো।’
আয়েশা বেগম বলেন, একরামুলকে ইয়াবা কারবারি হিসেবে হত্যা করা হয়নি। তাকে হত্যা করা হয়েছে মেরিন ড্রাইভ সড়কে জায়গা-জমির ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে। সংবাদ সম্মেলনে আয়েশা ঘটনার রাতে তার স্বামীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথোপকথনের অডিও রেকর্ড শোনান। ওই অডিওতে 'বন্দুকযুদ্ধে' গুলির শব্দসহ চিৎকারের শব্দও শোনা যায়।
লিখিত বক্তব্যে আয়েশা বলেন, একরামুল হকের সঙ্গে টেকনাফে কর্মরত একটি সংস্থার লোকজন জমি কেনার কথা বলে তিন সপ্তাহ আগে থেকে যোগাযোগ করতে থাকে। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ঘটনার দিন গত শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে হোটেল নেটংয়ে সংস্থার লোকজনের সঙ্গে দেখা করতে যান একরাম। মোটরসাইকেলে তেল নিতে স্বামী তার কাছে ৫০০ টাকা চাইলেও তিনি দিতে পারেননি। পরে নাফ হোটেলের ম্যানেজারের কাছ থেকে ৫০০ টাকা ধার নিয়ে যান।
আয়েশা বেগম বলেন, একরাম কখনও ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত ছিলেন না। তার ব্যাংক ব্যালেন্স বা সম্পদে অস্বাভাবিক কিছু নেই।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ মে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে কাউন্সিলর একরাম নিহত হন। এ সময় ১০ হাজার পিস ইয়াবা, একটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, ৬ রাউন্ড গুলি, ৫ রাউন্ড গুলির খোসা এবং একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয় বলে দাবি করে র্যাব।
সংবাদ সম্মেলনে আয়েশা বেগম প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, একরাম তার সারাজীবন কাটিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে। রাজনীতি করতে গিয়ে নিজের সংসারের প্রতি বেশি খেয়ালও রাখেননি। দুই মেয়ের ভবিষ্যতের জন্য তেমন কোনো অর্থও রাখতে পারেননি। আয়েশা বলেন, এ হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত। নিরীহ একজন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠবিচার দাবি করেন এবং বাবা হারানো দুই মেয়ের দায়িত্ব নিতে অনুরোধ করেন।
গত শনিবার রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের নোয়াখালীপাড়া এলাকায় 'বন্দুকযুদ্ধে' টেকনাফের কায়ুকখালি পাড়ার আবদুস সাত্তারের ছেলে একরামুল হক নিহত হন। তিনি টেকনাফ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তিনবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর ছিলেন।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড