জয়পুরহাট প্রতিনিধি
জয়পুরহাট জেলা সিভিল সার্জনের যৌন নিপীড়ন ধামাচাপা দিতে নারীসহ চার যুবকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দিয়ে গ্রেফতারের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার ( ১৫ ডিসেম্বর ) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জেল-হাজতে প্রেরণ করা হয়। এর আগে শুক্রবার গভীর রাতে এদের মধ্যে ৩ জনকে র্যাব সদস্যরা আটকের পর জয়পুরহাট সদর থানায় সোর্পদ করে।
আটককৃতরা হলেন- নাহিদা আক্তার (২৮), রুস্তম আলী (২৯) ও শাহজাহান আলী (২৯)। মামলার অপর আসামি রাফাত হোসেন (২১) এখনও পলাতক।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ৫ মাস আগে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালের টেকনোলজি ইন্সটিটিউট নির্মাণ কাজের টেন্ডারের পর থেকে অভিযুক্তরা সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার রেজার কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে সিভিল সার্জন বিভিন্ন সময় তাদের ৬ লাখ টাকা প্রদান করেন। পরে সিভিল সার্জনকে জড়িয়ে চারিত্রিক অপবাদ দেওয়ার হুমকি দিয়ে আরও চাঁদা দাবি করলে সিভিল সার্জন অভিযুক্তদের আরও ৭০ হাজার টাকা দেন। আরও হুমকি দেওয়ায় তিনি এ ব্যাপারে জয়পুরহাট র্যাব ক্যাম্পে একটি অভিযোগ দিলে র্যাব সদস্যরা অভিযুক্তদের নিজ বাড়ি থেকে আটক করে।
এ দিকে সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করে আটককৃত নাহিদা আক্তারের মা নাছিমা বেগম জানান, দরিদ্র পরিবারের নাহিদা সংসারে বাড়তি আয় জোগান দিতে জেলা শহরের গ্রাজুয়েট ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামের ওই বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন। পরে তিনি আল্ট্রাসনোগ্রাফির সহকারী হিসেবে যুক্ত হন। যেখানে সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার রেজা সনোলজিস্ট হিসেবে কর্মরত আছেন।
আল্ট্রাসনোগ্রাফির সহকারী হওয়ায় তিনি বিভিন্ন সময় নাহিদাকে দিয়ে ডা. রেজা শরীরের বিভিন্ন অংশ ম্যাসেজ করে নেওয়াসহ কুপ্রস্তাব দিতে থাকেন। এরই এক পর্যায়ে ডা. রেজা নাহিদার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর অংশে হাত দেওয়াসহ আপত্তিকর আচরণ করতে থাকেন।
এরই মধ্যে কে বা কারা কৌশলে গোপন ক্যামেরার মাধ্যমে ডা. রেজার এসব আপত্তিকর ঘটনাগুলোর কিছু ভিডিও ফুটেজ ধারণ করে। ভিডিও ফুটেজের ঘটনা জানতে পারার কারণে নাহিদা লোক-লজ্জা থেকে বাঁচতে ১ (এক) বছর আগে চাকরি ছেড়ে দেয়। এরই মধ্যে তার স্বামী এ ঘটনা জানায় সেও এক সন্তানসহ নাহিদাকে ছেড়ে চলে যায়।
নাছিমা বেগম আরও বলেন, আমরা গরিব মানুষ বাবা, মিথ্যা মামলায় আমার মেয়েকে ফাঁসানো হয়েছে।
জয়পুরহাট সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার রেজাকে কয়েকবার ফোন করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
জয়পুরহাট র্যাব ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর ফেরদৌস আলম জানান, চাঁদাবাজির অভিযোগে তাদের আটক করে জয়পুরহাট সদর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
জয়পুরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে মামলা গ্রহণ করে জেল-হাজতে পাঠানা হয়েছে। পরে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড