• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মৌলভীবাজারে অরক্ষিত ট্রান্সফরমার, ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎলাইন

  মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

১৪ নভেম্বর ২০১৮, ১৯:০৮
ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎ লাইন
বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ ইউনিয়নে ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎ লাইন টাঙানোয় ব্যস্ত দুই কর্মী (ছবি : দৈনিক অধিকার)

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ ইউনিয়নের কাশেমনগর গ্রামে ৩৩ হাজার ভল্টের বিদ্যুৎলাইনের অরক্ষিত ২০০ কেভির ২টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার কাঠ ও বাঁশের পোলে টানানো বিদ্যুৎলাইন যেন মৃত্যুফাঁদ। ইতঃপূর্বে ট্রান্সফরমারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কয়েকটি দুর্ঘটনা হয়েছে। তবুও টনক নড়েনি স্থানীয় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি)।

জানা যায়, পিডিবির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উৎকোচ নিয়ে প্রায় ১০-১২ বছর পূর্বে বিদ্যুৎ সংযোগের নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। কাঠের ও বাঁশের খুটি, সুপারি গাছ এমনকি রাস্তার পাশের জীবন্ত গাছের সাথে বিদ্যুৎলাইন টেনে কাশেমনগর, গুচ্ছগ্রাম, পুটাডহর, পূর্ব-হাতলিয়াসহ ৬টি গ্রামে প্রায় ৪শ বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। কিছু সংখ্যক গ্রাহকের মিটার স্থাপন করা হয়েছে। আর দুর্নীতিবাজ কর্মচারীরা অধিকাংশ গ্রাহকদের মাসোয়ারার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ দিয়ে থাকে।

এতে একদিকে রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ, অন্যদিকে চুরি করা ইউনিট কভার করতে গিয়ে নিরীহ গ্রাহকের ওপর ভুতুড়ে বিল চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া রাস্তার পাশ দিয়ে দুর্বল কাঠ ও বাঁশের পোলে বিদ্যুৎলাইন টানায় হালকা ঝড়-তুফানে খুটি পড়ে লাইন ছিঁড়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। আবার লাইন মেরামত করতে গড়িমসি করে কর্তৃপক্ষ।

ছবি : দৈনিক অধিকার

অরক্ষিত ট্রান্সফরমার (ছবি : দৈনিক অধিকার)

কাশেমনগর প্রাইমারি স্কুল সংলগ্ন রাস্তার পাশে ৩৩ হাজার ভোল্টের লাইনের ২০০ কেভির ২টি ট্রান্সফরমার উন্মুক্তভাবে রাখা হয়েছে। এগুলো প্রায়ই বিস্ফোরিত হয়। এছাড়া স্কুলের শিশু শিক্ষার্থীরা খেলাধুলার সময় এগুলোতে স্পৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার ছওয়াব আলী অভিযোগ করেন ট্রান্সফরমারে বিস্ফোরণ ঘটলে ও সমস্যা দেখা দিলে পিডিবির উপসহকারী প্রকৌশলী আনছারুল কবির শামীমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায় না। দুর্ঘটনা এড়াতে প্রায় ৩ বছর ধরে বেষ্টনী অথবা তারকাটার বেড়া দেওয়ার তাগিদ দিলেও আজ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

কাশেমনগর প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্রীধাম রুদ্র পাল জানান, স্কুলের মাঠে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করে। কাটা তারের বেড়া না থাকায় অনেক সময় বল ট্রান্সফরমারের ওপর গিয়ে পড়ে। তখন বল আনতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

স্থানীয় অভিভাবকরা জানান, ইতঃপূর্বে অনেকে এখানে আহত হয়েছে । প্রায়ই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হচ্ছে গবাদিপশু। রাস্তার ওপর অরক্ষিত ট্রান্সফরমারগুলো মাঝে মাঝে বিস্ফোরিত হয়। তখন লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করে। অথচ বিদ্যুৎ বিভাগ এগুলোর চারিদিকে গ্রিলের বেষ্টনী বা তারকাটার ভেড়া দিয়ে রাখলে এসব অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ঘটত না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সুহেল মাহমুদ জানান, এভাবে উন্মুক্ত বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ও ঝুঁকিপূর্ণ লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিপদজনক। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় তিনি বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পিডিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে অবহিত করা হবে।

পিডিবির উপসহকারী প্রকৌশলী আনছারুল কবির শামীম জানান, গ্রাহকের স্বার্থে কয়েক বছর আগে এখানে এভাবে সংযোগ দেয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ লাইনটি অত্যন্ত পুরোনো। বর্তমানে মেরামত কাজ চলছে। খুব শিগগির ট্রান্সফরমারের চারিদিকে বেষ্টনী নির্মাণ করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড