• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

স্বপ্ন পূরণকারী সেই ১৩ তরুণী

  ফয়সল বিন ইসলাম নয়ন

০৮ নভেম্বর ২০১৮, ১৬:০৮
অদম্য তরুণী
অদম্য সেই তরুণীদের কয়েকজন (ছবি :দৈনিক অধিকার)

দ্বীপ জেলা ভোলার চরফ্যাশনের ১৩ তরুণী নিজের মেধা ও যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে স্বপ্ন পূরণ করেছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের মেধাকে কাজে লাগিয়ে খুব সহজেই মিডিয়া অঙ্গনে প্রবেশের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে তাদের। নিজেরা খুঁজে পেয়েছে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ। খুব সহজেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌছাতে সক্ষম হয়েছে তারা। তারা এখন নিজেরাই রিপোর্টার, এডিটর, উপস্থাপিকা ও প্রোগামার। তারা সংবাদ লেখেন, লাইভে থাকেন এবং বিনোদনসহ নানা অনুষ্ঠান করে ইতোমধ্যেই বেশ সুনাম অর্জন করেছেন।

এরা অন্য কেউ নয়, সফল তরুণীদের গল্পটা এমনই। উপকূলের কণ্ঠস্বর হিসেবে পরিচিত রেডিও মেঘনার একঝাক উদ্যমী কর্মী। রেডিও মেঘনা বলতেই তৃনমূলে ছড়িয়ে রয়েছে অর্পিতা দাস, আখি, তৃষ্ণা রানী, বৃষ্টি আফরোজ নিশি, মৌসুমি রানী দাস, চম্পা কলী, সালমা, সোনিয়া, মিশু, ঝুমুর, রাত্রি, রিতু, শারমিন ও মুক্তা। দুরন্ত প্রতিভা এদের। এক সংগ্রামী জীবনের পথচলায় এগিয়ে আসছেন তারা।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কোস্ট ট্রাস্টের রেডিও এফ.এম ৯৯ দশমিক ০ কর্মী হয়ে এরা বেশ গর্বিত। পড়ালেখার পাশাপাশি এ কাজটিকে বেশ উপভোগ করছেন তারা। বিগত ২ বছরের অধিক সময় ধরে নিরলসভাবে কাজ করে রেডিও মেঘনাকে এগিয়ে নিয়েছেন তারা। রেডিও মেঘনা এখন তৃনমূল পর্যায়ে সবার কাছে এক পরিচিত মাধ্যম হিসেবে পৌঁছে গেছে।

সূত্র জানায়, রেডিও মেঘনা ২০১৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করে। এরপর থেকেই তাদের নিয়মিত আয়োজনে রয়েছে- কৃষি ও কৃষক, জেলে জীবন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ, স্বাস্থ্য, পাঠশালা, আজকের শিশু, ভূমিহীন মানুষ, সফল নারী, প্রতিভাবান নারী, সফল উদ্যোক্তা, আমরা কিশোর-কিশোরী, রঙ্গ, সাজ-সজ্জাসহ নানা আয়োজনের ২৫টি ইভেন্ট। এসব অনুষ্ঠান অত্যন্ত সফলভাবেই করে যাচ্ছেন রেডিও মেঘনার কর্মীরা। প্রতিনিয়ত মাঠ পর্যায়ে কাজ করেই রেডিও মেঘনার জন্য তুলে আনছেন সাক্ষাৎকার সংবাদ তৈরি, ভয়েস দেওয়া, তৃনমূলের প্রতিচ্ছবি ও বিনোদনের নানা আয়োজন।

এসব নারীদের নেতৃত্বে রয়েছেন আরেক সফল নারী রাশিদা বেগম। তার দিক নির্দেশনায় এসব তরুণীরা এগিয়ে যাচ্ছেন। সংগ্রামী তরুণীদের মধ্যেই একজন অর্পিতা দাস আখি। তিনি চরফ্যাশন সরকারি কলেজে বিকম পড়ছেন। বাবা সুখরঞ্জন দাস একজন সরকারি চাকরিজীবী। আখি রেডিও মেঘনার টেকনিক্যাল অফিসার পদে দায়িত্বরত রয়েছেন।

তিনি বলেন, এক সময় স্বপ্ন দেখতাম মিডিয়া অঙ্গনে প্রবেশ করব, এখন স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে। এক বছর ধরে তিনি এর সাথে যুক্ত রয়েছেন। তিনি বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি মিডিয়ায় কাজ করতে পেড়ে খুবই আনন্দিত। এ পেশাটিকে আমি খুব উপভোগ করছি।

একজন দক্ষ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করছেন আরেক তরুণী তৃষ্ণা রানী পাল। তিনিও চরফ্যাশন কলেজে ডিগ্রিতে অধ্যয়নরত। তিনি বলেন, এক সময় রেডিওতে কাজ করার স্বপ্ন দেখতাম, অবশেষে সেই স্বপ্ন পূরণ হলো এখন আমি একজন প্রতিষ্ঠিত রিপোর্টার হওয়ার স্বপ্ন দেখি।

অ্যাসিস্টেন স্টেশন অফিসার হিসেবে দক্ষতার সাথেই কাজ করছেন আরেক সংগ্রামী তরুণী বৃষ্টি আফরোজ নিশি। তার বাবা মো. সালাউদ্দিন, কৃষি কাজ করেন তিনি। নিশির আয়ের উপার্জিত টাকা দিয়ে পড়াশুনা ও তাদের জীবন-জীবিকা চলে। নিশি পড়ছেন অনার্সে। মাসে যা পান তা পেয়ে খুব খুশি তিনি। নিশি বলেন, পরিচিত একজনের সহযোগিতায় রেডিওতে কর্মসংস্থান হয়েছে। মিডিয়াতে কাজ করার স্বপ্ন পূরণ হলো, ভবিষ্যতে একজন প্রতিষ্ঠিত মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে চাই।

আরেক সংগ্রামী নারী মৌসুমি রানী দাস। তার পিতা লক্ষি কান্তি দাস একজন ব্যবসায়ী। পড়াশোনার পাশাপাশি মৌসুমি কাজ করছেন মৌসুমি। রেডিও মেঘনার উপস্থাপিকা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মৌসুমি বলেন, রেডিও মেঘনায় আসতে সহযোগিতা করেছেন তারই সহকর্মী নিশি। পড়ালেখার পাশাপাশি রেডিওতে কাজ করে বেশ আনন্দিত তিনি।

শুধু রিপোর্টিং, উপস্থাপনা ও প্রোগ্রাম করেই নয়, কবিতা, আবৃতি, নাটক ও কৌতুকের বেশ পারদর্শী চম্পা কলী। খুব প্রতিভা রয়েছে রেডিও মেঘনার এ কর্মীর। তার বাবা সিরাজুল ইসলাম একজন ব্যবসায়ী। ৭ ভাইয়ের এক বোন তাই তার নাম চম্পা একমাত্র আদরের মেয়ে। পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা চম্পা কলি শুরু থেকেই আছেন রেডিওতে। চম্পা বলেন, নিজের মেধা ও যোগ্যতাকে কাজে লাগানো সাফল্য নিশ্চিত তাই সব সময় মেধাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি ভবিষ্যতেও একজন প্রতিষ্ঠিত মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হতে চাই। তিনি আরও বলেন, নারী হয়ে আমাদেরও মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে কোনো প্রতিকূলতার মধ্যে পড়তে হয় না। আমাদেরকে সকলে সহযোগিতা করেন।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড