• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে কুপ্রস্তাবের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি

  গাজীপুর প্রতিনিধি

৩০ অক্টোবর ২০১৮, ২০:৫১
গাজীপুর
বলদীঘাট জেএম সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল হক

গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার বলদীঘাট জেএম সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল হকের বিরুদ্ধে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়ার সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি।

জেএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রলোভন দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেয়া হয়। বিদ্যালয়ের লেখা পড়ার সকল খরচ বিনা মূল্যে করে দেয়ার কথাও বলেন ওই শিক্ষক।

মঙ্গলবার বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে তদন্ত রির্পোট জমা দেবে তদন্ত কমিটি। দুই সদস্যের তদন্ত কমিটিতে ছিলেন- উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.সাইফুল ইসলাম, সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জুলফিকার আলম। তদন্ত কমিটির প্রধান মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, গত সোমবার বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করা হয়েছে। এর সাথে ওই ছাত্রী ও তাঁর মায়ের বক্তব্য নেয়া হয়।

এতে প্রধান শিক্ষক ওই মেয়ের দরিদ্রতার সুযোগ নিয়ে তাঁর সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়তে চেয়ে প্রস্তাব দেয়। তাঁর (শিক্ষক) বিরুদ্ধে একাধিক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়ার প্রমাণও মিলেছে। তবে ওই সকল ছাত্রী এখন বিদ্যালয়ে পড়ে না। যার ফলে তাদের সাথে যোগাযোগ করা যায়নি।

ওই ছাত্রীর মা বলেন, দরিদ্রতার সুযোগে আমার মেয়ের সাথে ওই শিক্ষক শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে চেয়েছিল। এমন আরও অনেক মেয়েদেরকে কুপ্রস্তাব দিয়েছে। তারা ভয়ে কেউ মুখ খুলেনি। আমি দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি, যাতে ওই শিক্ষক ভবিষ্যতে অন্য কোনো মেয়েকে এমন কুপ্রস্তাব দিতে না পারে।

শুরুর ঘটনা, পরীক্ষা দিতে চাও। তাহলে আমার সঙ্গে রাত কাটাও এভাবেই গাজীপুরের শ্রীপুরে বলদীঘাট জেএম সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিকগোষ্ঠী আদিবাসী সম্প্রদায়ের এক ছাত্রীকে মুঠোফোনে কু-প্রস্তাব দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মো.সিরাজুল হক। কু-প্রস্তাবের অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ফেসবুকে’ ফাঁস হয়েছে।

ওই ছাত্রীর অভিযোগ, তার সঙ্গে রাত না কাটালে জেএসসি পরীক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করে দেবেন না বললেন বলদিঘাটের জেএস সরকার উচ্চ বিদ্যলয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল হক। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দ্বায়ের করে ছাত্রী।

অভিযোগ সূত্র জানা যায়, আর্থিক সমস্যার কারণে মেয়ের পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে পারছে না ওই স্কুল ছাত্রীর পরিবার। গত ২৭ অক্টোবর বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে গিয়ে অল্প টাকায় ফরম করার কথা বললে তাঁর সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলার প্রস্তাব দেয় এবং যতদিন বিদ্যালয়ে পড়বে ততদিন তাঁর কোনো খরচ হবে না বলেও জানান প্রধান শিক্ষক সিরাজুল হক। এমন প্রস্তাব পেয়ে স্কুল ছাত্রী লজ্জায় প্রধান শিক্ষকের কক্ষ ত্যাগ করে।

এরপর অনেক বার তাকে ফোনেও কুপ্রস্তাব দেয় ওই শিক্ষক সিরাজুল হক। বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের চরিত্র যদি এমন হয় তাহলে আমাদের প্রতিষ্ঠানে কেউ তাঁর সন্তানদের লেখাপড়া করার জন্য দিবে না।

অভিভাবকরা বলেন, এ বিদ্যালয়ে আমাদের ছেলে মেয়েদের কীভাবে পড়াতে দিব। এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রধান শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক সিরাজুল হক বলেন, আমি কোনো ছাত্রীর সাথে এ রকম বিষয়ে ফোন আলাপ করিনি, এটা আমার বিরুদ্বে অপপ্রচার।

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রেহেনা আকতার বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন সম্পূর্ণ সত্যতা পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড