• শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মায়ের ওষুধ কিনতে যাচ্ছিল যুবক, পা ধরেও ট্রাফিক মামলা থেকে রক্ষা হলো না

  মাজেদুল ইসলাম হৃদয়, ঠাকুরগাঁও:

০১ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:০৭
ট্রাফিক মামলা

ঠাকুরগাঁওয়ে অসুস্থ মায়ের জন্য ঔষুধ কিনতে মোটরসাইকেল নিয়ে দোকানে যাওয়ার পথে ট্রাফিক পুলিশের চেকপোস্টের মুখে পড়েন এক মোটরসাইকেল আরোহী। এ সময় হাত পা ধরে মাফ চাইলেও জরিমানা থেকে রক্ষা পায়নি। আর এমন একটি ভিডিয়ো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুহুর্তেই ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভ প্রকাশ করে নেটিজেনরা।

গতকাল রবিবার (৩১ মার্চ) ঠাকুরগাঁও শহরের কালিবাড়ী এলাকার জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সামনে ঘটনাটি ঘটে।

ইতোমধ্যে ২৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিয়ো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনাও নিন্দার ঝড় উঠেছে সর্বস্তরে।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ভিডিয়োতে ভাইরাল হওয়া মোটরসাইকেল আরোহীর পরিচয় পাওয়া যায়নি। ঘটনার সময় এক প্রত্যক্ষদর্শীর ধারণ করা ভিডিয়োতে দেখা গেছে, ঠাকুরগাঁও জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের গেটের পাশে মোটরসাইকেল আরোহী যুবক ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্যকে দুই হাত জোড় করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে অনুরোধ করছে জরিমানা ও মামলা না দিতে।

এ সময় পুলিশ সদস্য পাশে থাকা ট্রাফিকের শহর ও যানবাহন পুলিশের ইনচার্জ আমজাদ হোসেনকে দেখিয়ে দেয়। এরপর ভুক্তভোগী হাউমাউ করে কেঁদে কেঁদে বলতে থাকেন স্যার আমার ভুল হয়েছে, আমার মা অসুস্থ্য, ওষুধ কেনার জন্য এসেছি, আমার মা মরে যাবে, এবারের মতো মাফ করে দেন। এক পর্যায়ে যুবক ওই পুলিশ কর্মকর্তার দুই পা ধরে ক্ষমা চান।

তবে এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা এবারের মতো ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তাকে। কিন্তু তবুও যেন তার শেষ রক্ষা হয়নি।

মোটরসাইকেল আরোহীর কান্নার ভিডিয়ো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় এরই মধ্যে সুষ্ঠু বিচার ও আইন প্রয়োগের বিভিন্ন মন্তব্য করেন নেটিজেনেরা। আর যাতে ভবিষ্যতে আর কোন গাড়ি চালকের উপর এমন অমানবিক আচরণ করতে না পারেন সেদিকে খেয়াল রাখার আহব্বান জানান পুলিশ সুপারকে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের উপ কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক আওলাদ হোসাইন পাপন ফেইসবুকে লিখেছেন, আইন মানুষের কল্যাণে তৈরি হয়েছে। সেই আইনকে পুঁজি করে যদি কেও মানুষের অকল্যাণে ব্যবহার করে তাহলে সেটা কখনই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার এই সুশাসনে মেনে নেওয়া যায় না। মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের চোখ কখনোই এ ব্যাপারটি এড়িয়ে যাবে না।

উর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে একজন মন্তব্য করেন এখন সময়ের দাবী ট্রাফিক ও পুলিশের গাড়ির কাগজপত্র দেখার নামে হয়রানি বন্ধ করা উচিৎ। এক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের শুভ দৃষ্টি কামনা করেন।

ক্ষোভ প্রকাশ করে আরোএকজন লিখেছেন, শক্তের ভক্ত নরমের যম। হাজার হাজার বাস-ট্রাক আছে, যাদের কোন ফিটনেস রেজিস্ট্রেশন নাই, গাড়ি ভাঙ্গা চুরা রাস্তায় চলছে, ট্রাফিক সার্জেন দেখেও না দেখার ভান করে। কারণ বাসের মালিক অনেক প্রতাপশালী। একটা মানুষ কতটুকু অসহায়বোধ করলে সার্জেনের পা ধরে।

উল্লেখ্য, বুধবার (২৭ মার্চ) ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক তার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জানান, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে গত ৮ মাসে জেলায় সড়ক পরিবহন আইনে ৫১৫২টি মামলা হয়েছে। এ সব মামলায় জরিমানা আদায় হয়েছে ১ কোটি ৯২ লাখ ৪৭ হাজার ৪৫০ টাকা।

আর মোটরসাইকেল আরোহীর বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশের পুলিশ পরিদর্শক (শহর ও যানবাহন) এর দায়িত্বরত কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন জানান, আইন সবার জন্য সমান হাত পা ধরে মাফ চাইলে কি সমাধান পাওয়া যায়। ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় ৫০০০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় বলে নিশ্চিত করেন তিনি।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড