রিপন দাস, পটুয়াখালী
পটুয়াখালীতে ঘূর্ণিঝড় মিধিলি আঘাত হানতে শুরু করেছে, বর্তমানে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইছে জানিয়েছে পটুয়াখালী আবহাওয়া পর্যবেক্ষন কেন্দ্র।
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকাল ০৯ টায় মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরো উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ (১৭ নভেম্বর) বিকেল নাগাদ খেপুপাড়ার নিকট দিয়ে মোংলা- পায়রা উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাপ রয়েছে। পায়রা ও মোংলা ০৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ০৬ (ছয়) নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় মিধিলি দ্রুতগতি সম্পন্ন হওয়ায়, গতকাল রাতেই আগাম প্রস্তুতি সভা করেছে পটুয়াখালী জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক নূর কুতুবুল আলমের সভাপতিত্বে সভায় জেলার সকল সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা নিজ দপ্তরের প্রস্তুতি তথ্য উপাত্ত তুলে ধরেন। জেলা প্রশাসক জানান, জেলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলায় ৭০৩ টি আশ্রয়, ৩৫ টি মুজিব কেল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এতে প্রায় চার লক্ষ দুর্গত মানুষ ও লক্ষাধিক গবাদিপশুর আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা যাবে। প্রয়োজন হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি- বেসরকারি বহুতল ভবনগুলোও ব্যবহার করা হবে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেলটিমসহ সিপিপি, রেড ক্রিসেন্ট, ফায়ার সার্ভিসের কমিউনিটি ভলান্টিয়ারসহ স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রায় ৯হাজার সদস্যদের প্রস্তুত করা হয়েছে। তারা সকাল থেকেই সংকেত প্রচার করছেন।
এছাড়াও দুর্গতদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্রে খাদ্য পানি ও শিশু খাদ্যের জন্য ৮ লক্ষ টাকা ও ৬৫০ মেট্রিকটন চাল খাদ্য শস্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গত ঘূর্নিঝড়ের জরুরি বরাদ্দ আছে ২০ লক্ষ টাকা।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জেলা গতকাল থেকে হালকা, মাঝারি ও রাত থেকে ভরি বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। জেলা সকাল ৯ টা পর্যন্ত ৮৭ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড ও ঘন্টায় ১৫ নটিক্যাল মাইল গতিতে বায়ু প্রবাহিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় আবহাওয়া অফিস।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলার অনূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় মিধিলা'র সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় পায়রা বন্দর কতৃপক্ষ সতর্ক রয়েছে।
দুর্যোগ মোকাবেলায় ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর জন্য পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ কমিটি, কন্ট্রোল রুম পরিচালনা কমিটি, ইমারজেন্সি রেসপন্স টিম এবং মেডিকেল টিম করে আলাদা আলাদা কয়েকটি দূর্যোগ ব্যাবস্থাপনা টিম গঠন, বন্দরে অবস্থানরত সকল জাহাজসমূহকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া এবং বন্দরের নিজস্ব জলযান, মালামাল ও ইকুইপমেন্টসমূহকে সর্বোচ্চ নিরাপদ অবস্থানে রাখা এবং বন্দরের সকল প্রকার অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড