• শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মাদরাসার সভাপতি হতে সুপারকে আটকে রেখে নির্যাতন মেয়রের, ৯৯৯-তে কল দিয়ে রক্ষা

  রাকিব হাসনাত, পাবনা

১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৭:১৯
মেয়র

দাখিল মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হতে পাবনার সাঁথিয়ায় আব্দুর বারি নামের এক মহিলা মাদরাসার সুপারকে মেয়রের কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতন ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে উদ্ধার করছে পুলিশ। রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টার দিকে সাঁথিয়া পৌরসভার মেয়র মাহবুবুল হক বাচ্চুর কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

আব্দুল বারি পাবনা সদরের ভাঙ্গাবাড়িয়ার আব্দুল গফুর জোয়ার্দারের ছেলে ও সাঁথিয়া বালিকা দাখিল মাদরাসার সুপার।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সাঁথিয়া পৌরসভাধীন বালিকা দাখিল মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের জন্য প্রাথমিকভাবে একটি এডহক কমিটি গঠন করা হবে। বিষয়টির প্রক্রিয়া শেষের দিকে। জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট শামসুল হক টুকু এমপির ছেলে, বেড়া পৌর মেয়র এডভোকেট আশিফ শামস রঞ্জন সাঁথিয়া পৌর সভার ভাইস চেয়ারম্যান সোহের রানা খোকনকে এডহক কমিটিতে সভাপতি মনোনয়ন দিতে বলেন। এই নিয়ে গত এক বছর ধরে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। সাঁথিয়া পৌর মেয়র মাহবুবুল হক বাচ্চু ম্যানেজিং কমিটির এডহক কমিটির সভাপতি হওয়ার জন্য জোর তদবির চালায়। আজকে সকালে সাঁথিয়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় পৌর সভার কর্মচারীকে পাঠিয়ে মাদরাসার সুপারকে মেয়রের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে আসা হয়। মেয়র তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। তাকে সভাপতি বানাতে ভয়ভীতি পদর্শন করেন। এরপর মেয়রের পাশের রুমে নিয়ে মেয়রের সহযোগী সাদ্দাম ও বিষু আব্দুর বারিকে মারপিট করে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হয়। এ সময় মাদ্রাসার অফিস সহকারী মোক্তার হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তিনি পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সাঁথিয়া থানায় ফোন করেন। পরে জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মাদরাসার সুপার আব্দুর বারিকে উদ্ধার করে। আব্দুর বারিকে উদ্ধার করে সাঁথিয়াতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

সাঁথিয়া বালিকা দাখিল মাদরাসার সুপার আব্দুর বারি বলেন, আজকে সকালে পৌর মেয়রের কার্যালয় থেকে লোক পাঠিয়ে আমাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর মেয়র সাহেব আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে অন্য রুমে নিয়ে আমাকে নির্যাতন ও সভাপতি বানাতে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়। এরপর মাদ্রসার অফিস সহকারী থানায় মোবাইল করে ঘটনা জানান। পরে ৯৯৯ নম্বরে কল করলে পুলিশ এসে উদ্ধার করে।

তিনি আরও বলেন, মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের জন্য এডহক কমিটি গঠনের পক্রিয়া চলছে। এমপি মহোদয়ের ছেলে ও বেড়া পৌর মেয়র সাঁথিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা খোকনকে সভাপতি করার কথা বলেন। আমরা নিয়মের প্রক্রিয়ায় এডহক কমিটি গঠনের দিকে যাচ্ছি। কিন্তু মেয়র সাহেব সভাপতি হওয়ার জন্য আমাকে ডেকে নিয়ে গালিগালাজ, লাঞ্চিত ও নির্যাতন করে। এর আগে গত ৬ জুলাই পৌর মেয়র তার কক্ষে ডেকে আমাকে লাঞ্চিত করেছিল। আজকেআ মার কাছে পুলিশ আসছিল। তারা সব শুনে গেছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবি করেন তিনি। আগামীকাল থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে।

অভিযুক্ত সাঁথিয়া পৌর মেয়র মাহবুবুল আলম বাচ্চু বলেন, এসব ঘটনা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। সকাল ১০ টায় আমি ইউএনও অফিসে ছিলাম। আমাকে যারা দেখতে পারে না, তারা আমার বিরুদ্ধে গুজব ছড়াচ্ছে।

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মাসুদ আলম বলেন, মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে পূর্ব থেকে তাদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। আজকে সকাল ১০ টার দিকে মেয়র মাহবুবুল আলম বাচ্চু মাদরাসা সুপারকে কার্যালয়ে ডেকে আনেন। পরে সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। তবে ঘটনা অন্য কিছু থাকতে পারে সে বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। সঠিক ঘটনা বের করা হবে। দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় এসপি স্যার আমাদের পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরী করার নির্দেশনা দিয়েছেন।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড