আ. লীগ প্যানেলের বিরুদ্ধে একজোট জামায়াত-বিএনপি

কুড়িগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্যানেলের বিরুদ্ধে যৌথভাবে প্যানেল দাঁড় করিয়েছে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিতরা। আজ বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) তারিখে অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে ঘিরে শুরু হয়েছে কৌতূহল।

আওয়ামী লীগ সমর্থিত খুরশীদ-নাজমুল এবং বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ইয়াছিন-কাশেম প্যানেলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে এমনই সম্ভাবনা দেখছেন ভোটাররা। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে ইতিমধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট সামসুল হক সরকার।

সমিতি ভুক্ত ২৭৮জন আইনজীবীর মধ্যে বৈধ ভোটার ১৭৩জন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মজনু মিয়া প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন। পর্যবেক্ষক হিসেবে থাকবেন সিনিয়র আইনজীবী কে এস আলী আহমেদ, মো. ছাহের উদ্দিন মিয়া এবং এ কে এম গোলাম রব্বানী। ১৯টি পদের বিপরীতে দুটি প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩৮জন।

আওয়ামী লীগ সমর্থিত খুরশীদ-নাজমুল প্যানেলে সভাপতি হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন খুরশীদ আলম, সহ-সভাপতি হিসেবে সুজিৎ কুমার চক্রবর্তী ও জহির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক পদে নাজমুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে খন্দকার মহব্বত, কোষাধ্যক্ষ পদে আব্দুল মান্নান, দপ্তর সম্পাদক পদে জাহিদ আহমেদ কাজল, সাংস্কৃতিক ও আপ্যায়ন সম্পাদক পদে জাকিয়া সুলতানা সুইটি, ক্রীড়া সম্পাদক পদে টি এম আরিফুজ্জামান কল্লোল, লাইব্রেরি সম্পাদক পদে বকসী মিজানুর রহমান সাজু, সদস্য পদে মোশারফ হোসেন, কামরুজ্জামান মুন্সি রানা, সেলিম মিয়া সেতু, মিসেস আফরোজা শারমিন, লাল মিয়া লিটু, তোফায়েল হোসেন, ইদ্রিস আলী খন্দকার ফিটু, সরোয়ার কবীর মিথুন ও আব্দুল্লা আল মামুন। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেলের সবাই আওয়ামী আইনজীবী সমিতির সদস্য।

অপর দিকে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ইয়াছিন-কাশেম প্যানেলে সভাপতি প্রার্থী ইয়াছিন আলী সরকার, সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম ও আমির উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক পদে আবুল কাশেম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে মোখলেছুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ পদে সরদার মোঃ তাজুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক পদে তারিকুর রহমান তারিক, সাংস্কৃতিক ও আপ্যায়ন সম্পাদক পদে মিজানুর রহমান সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক পদে আব্দুল মজিদ আকন্দ, লাইব্রেরী সম্পাদক পদে আব্দুল হাই মন্ডল, সদস্য পদে জিয়াউল হক মিলন, নুরে আলম সিদ্দিকী, নাজিরুজ্জামান রুবেল, শেখ মো. জামাল (জনি), আলমগীর হোসেন, মেরিনা আক্তার (মিথেন), আরিফ রব্বানী, এস এম জাহিদুল ইসলাম খোকন ও আমির হোসেন।

বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্যানেলে সভাপতি, সহ-সভাপতি, কোষাধ্যক্ষ ও লাইব্রেরী সম্পাদকসহ ৮ জন জামায়াতের, সহ-সভাপতি, দপ্তর, আপ্যায়ন সম্পাদকসহ ৭ জন, সাধারণ সম্পাদক গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সদস্য, সহ-সভাপতিসহ একজন সদস্য আওয়ামী লীগ সমর্থিত এবং ক্রীড়া সম্পাদক জাতীয় পার্টি সমর্থিত ফলে প্যানেলে বিএনপির অবস্থান একেবারেই দুর্বল হওয়ায় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামে গ্রুপিং এখন তুঙ্গে।

জেলা আইনজীবী সমিতির প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও জেলা আইনজীবী সমিতির প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট সামসুল হক সরকার বলেন, গত ডিসেম্বরে নির্বাচন করবার কথা থাকলেও গঠনতন্ত্রের সমস্যা এবং দুই পক্ষের আপত্তির কারণে এতদিন নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি।

অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম বসুনিয়া ও অ্যাডভোকেট ভক্ত দাস বকসীকে সদস্য করে তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন বার পরিচালনা করে আসছে। সকল পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে গত ১৮/০৭/২৩ নির্বচনের তফসীল ঘোষণা করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। জেলার মর্যাদাপূর্ণ এবং গুরুত্বপূর্ণ এ নির্বাচনকে ঘিরে প্রশাসন, প্রধান রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ এবং অন্যান্য পেশাজীবী সংগঠনগুলোর মধ্যে আগ্রহ রয়েছে।

অনেকেই খোজ খবর রাখছেন। সকল পক্ষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নির্বাচন পরিচালনা হলেও পূর্ববর্তী কমিটির মেয়াদকালীন সময়ে নির্বাচন সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি।

এ সংকট সৃষ্টি হওয়ায় উদ্ভূত পরিস্থিতি ও সংকট নিরসনে এই প্রথম নির্বাচন কমিশন সর্ব সম্মতিক্রমে ৯ মাস থেকে কুড়িগ্রাম বারের দায়িত্ব পরিচালনা করেন।