• সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পদ্মা নদী থেকে জব্দকৃত ড্রেজার ও বাল্কহেড নিয়ে ধোঁয়াশা

  শুভংকর পোদ্দার, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ)

০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:১৮
পদ্মা নদী থেকে জব্দকৃত ড্রেজার ও বাল্কহেড নিয়ে ধোঁয়াশা

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জব্দকৃত একটি ড্রেজার বালু উত্তোলনকারীরা ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় জব্দ করা বালুবাহী একটি বাল্কহেড নিয়েও তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।

বালু উত্তোলনকারীরা দলবলসহ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী হরিরামপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও তাপসী রাবেয়াকে জিম্মি করেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার ধুলশুড়া ইউনিয়নের পদ্মা নদীতে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। তবে বুধবার (৩০ আগস্ট) বিকাল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত ছিনিয়ে নেওয়া জব্দকৃত ড্রেজার ও বাল্কহেড উদ্ধার এবং এসিল্যান্ডকে জিম্মি করার বিষয়ে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এতে বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও তাপসী রাবেয়া সাংবাদিকদের বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে পদ্মা নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে যান। তার সাথে তিনজন পুলিশ সদস্য এবং আনসার সদস্যরা ছিলেন। গিয়ে তিনি দেখতে পান উপজেলার শেষ সীমানায় ধুলশুড়া ইউনিয়নে পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

এ সময় তিনি ঘটনাস্থল থেকে একটি ড্রেজার এবং বালুবাহী একটি বাল্কহেড জব্দ করেন। সেগুলো নিয়ে ফিরে আসার সময় দোহার থেকে স্পিডবোট ও ট্রলারযোগে প্রায় দেড় শতাধিক লোক এসে তাদেরকে ঘেরাও করেন। এ সময় ড্রেজারটি তারা নিয়ে যায়। তবে, বাল্কহেডটি তিনি ছাড়েননি। তাদেরকে ঘেরাও করা লোকজন বাল্কহেডসহ তাদেরকে দোহারের মৈনট ঘাট এলাকায় নিয়ে যান।

তাৎক্ষণিক এসিল্যান্ড বিষয়টি মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসককে জানালে তিনি ঢাকার জেলা প্রশাসককে জানান। এরপর ঘটনাস্থলে যান দোহারের এসিল্যান্ড এস. এম. মুস্তাফিজুর রহমান। দোহারের এসিল্যান্ডকে মৌখিকভাবে বাল্কহেডটি বুঝিয়ে দিয়ে তিনি হরিরামপুরে ফিরে আসেন। তবে, বাল্কহেড বা ড্রেজারের মালিক কে সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।

ভ্রাম্যমাণ আদালতে জব্দ করা ড্রেজার ছিনিয়ে নেওয়ার পর তা উদ্ধারে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি-না এবং জব্দ করা বাল্কহেডটি রেখে আসা হলো কেন-জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না।

তবে দোহার উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস. এম. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাকে আমার ইউএনও স্যার জানান, হরিরামপুরের এসিল্যান্ড আসছেন মোবাইল কোর্টে, কি একটা বিষয়ে জটিলতা হচ্ছে, তুমি যাও। আমি গিয়ে এসিল্যান্ডকে মৈনট ঘাটে দেখি। তিনি আমাকে জানান, এরা বালু উত্তোলন করছিল আমি বাল্কহেডটি ধরেছি। আপনার কাছে দিয়ে আমি চলে যাচ্ছি। তিনি আমার জিম্মায় কিভাবে দিলেন, আমি বুঝতে পারছি না। তিনি আমাকে লিখিতভাবে দেননি। আমাদের এখানে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের কাজ চলছে। আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা এবং সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলি। তারা জানান যে, বাল্কহেডটি তাদের, সেটি নদী ভাঙন রোধের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। এসিল্যান্ড যদি বাল্কহেডটি জব্দ করে থাকে, তাহলে সে বিষয়ে তিনিই বলতে পারবেন।

মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে দোহারের ইউএনও মোবাশ্বের আলম বলেন, গতকাল এ রকম ঝামেলা হয়েছিল শুনেছি। তবে, বাল্কহেড বুঝিয়ে দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।

মোবাইল কোর্টে জব্দকৃত ড্রেজার ছিনিয়ে নেওয়া এবং এসিল্যাণ্ডকে জিম্মির বিষয়ে বক্তব্যের জন্য মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মেসেজ দিয়ে জানাতে বলে কলটি কেটে দেন। পরবর্তীকালে তাকে হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড