আতিয়ার রহমান, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া)
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আদালতের আদেশ অমান্য করে পাকুড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪টি পদে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান ও প্রধান শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলাম ওই সকল নিয়োগ প্রত্যাশীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে আদালতের আদেশ অমান্য করে তড়িঘড়ি করে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
ফলে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকার সচেতন মহল ও গ্রামবাসী। নিয়োগ বন্ধে আদালতের নিষেধাজ্ঞা চেয়ে অভিযোগও করেছেন তারা।
এলাকাবাসী ও নিয়োগ বন্ধে আদালতে অভিযোগ দায়েরকারী পাকুড়িয়ার গ্রামের আশরাফুজ্জামান ওরফে আশরাফ মেম্বর ও গোলাম মোস্তফা জানিয়েছেন, দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের সীমান্ত সংলগ্ন পাকুড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শূন্য পদে একজন করে অফিস সহকারী, অফিস সহায়ক, আয়া ও নৈশ-প্রহরী পদে নিয়োগের জন্য গত ২ আগস্ট অপ্রচলিত ও অপ্রচারিত পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলাম।
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সূত্র ধরে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান একই এলাকার তার নিকট আত্মীয় মো. রাসেল, টুনটুনি খাতুনসহ ৪জনকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য তড়িঘড়ি করে তাদের কাছ থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করেন।
একই সাথে নিয়োগ দেওয়া হবে এমন শর্তে তাদের কাছ থেকে অন্তত ৩৫ লক্ষ টাকা নিয়োগ বাণিজ্যের অলিখিত চুক্তি করেন।
বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসীর পক্ষে পাকুড়িয়ার গ্রামের আশরাফুজ্জামান ওরফে আশরাফ মেম্বর ও গোলাম মোস্তফা নিয়োগ বন্ধে আদালতের শরণাপন্ন হোন। নিয়োগ বন্ধের আদেশ চেয়ে তারা গত ১৭ আগস্ট কুষ্টিয়া আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগটি আমলে নিয়ে আদালতের বিচারক গত ২০ আগস্ট কেন নিয়োগ বন্ধ করা যাবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা চেয়ে ২১ কার্য দিবসের মধ্যে আদালতে হাজির হয়ে পাকুড়িয়া ম্যাধ্যমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান ও প্রধান শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলামকে জবাব দেওয়ার আদেশ দেন।
আদেশ প্রাপ্তির পরও তারা তড়িঘড়ি করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্নের জন্য গত শনিবার ছুটির দিন নিয়োগ প্রত্যাশীদের আবেদন যাচাই-বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন করেন এবং এবছর হজ্ব পালন করে আসা দুর্নীতি পরায়ণ দৌলতপুর মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সরদার মো. আবু সালেকের মাধ্যমে নিয়োগ বোর্ডের প্রতিনিধিও চূড়ান্ত করেন।
আদালতের আদেশ অমান্য করে পাকুড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান ও প্রধান শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলাম তড়িঘড়ি করে বিপুল অংকের অর্থের বিনিময়ে তাদের নিকট আত্মীয় ও অযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করায় এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নিয়োগ বন্ধে তারা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে পাকুড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলামকে ফোন দেওয়া হলে তিনি বলেন, আমি ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলেন’ বলে তিনি ফোনটি কেটে দেন।
উল্লেখ্য, পাকুড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে রেবেকা পারভিন নামে একজন মহিলা অভিভাবক সদস্য পরাজিত হয়েও ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে তাকে অভিভাবক সদস্য নির্বাচিত করেছেন ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান ও প্রধান শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলাম। এলাকাবাসীর এমন অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড