মো. নাজমুল সাঈদ সোহেল, চকরিয়া (কক্সবাজার)
মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার জমি ও আমন ধানের রোয়া উপড়ে নষ্ট করেছে প্রভাবশালী এক বিএনপি নেতা। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বন্যা দুর্গত এলাকা হারবাং ইউনিয়নের খিলঘোনা এলাকায়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামানের অভিযোগ, স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকে নিজের দখলীয় একখণ্ড জমিতে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন তিনি। সেই জমিটি দখল ও রোপা আমন নষ্ট করা হয়েছে। জমি পেতে এখন অসুস্থ শরীর নিয়ে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সেনা সদস্য মনির।
এ ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান।
৭১ এর ১ নম্বর সেক্টরের অধীনে সেনা বাহিনীর করপোরাল অফিসার পদে থেকে যুদ্ধ করেছেন মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান। যুদ্ধ শুরুর পর ১নং সেক্টর অধিনায়ক জিয়া উদ্দিন বীর প্রতীক। তার সাথে যশোর, বেনাপোল, বঙ্গ থেকে মেঘালয়, আসাম ত্রিপিরা, শেষে অপারেশন সিলেট হবিগঞ্জে এমসি কলেজ যুদ্ধ শেষে ঢাকায় ফিরে আসেন।
সেনা বাহিনীতে চাকুরিরত অবস্থায় যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধ করেন দীর্ঘ ৯ মাস। যুদ্ধ শেষ হয়, স্বাধীন হয় দেশ। স্বাধীনতার পর তিনি ১৯৮৮ সালে অবসরে চলে আসেন।
চট্টগ্রামের মহালছড়ি সেনা নিবাস থেকে চট্টগ্রাম সেনা নিবাসে যোগদান করেন এবং সেই সেনা সেখান থেকে অবসর নেন। অবসরের পর থেকে ৭০ শতক জমিতে ফসল ফলিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল এই মুক্তিযোদ্ধা মনির।
সম্প্রতি বন্যায় উপজেলার অন্যান্য স্থানের মতো হারবাং এলাকায়ও ফসলী জমিসহ রাস্তা ঘাটের ক্ষতি হয়। বানের পানি নামার সাথে সাথে ফসলী জমি আমন রোয়া এখন তছনছ। রোয়া উপড়ে ফেলে জমিটি দখল করে নেন স্থানীয় বিএনপি নেতা জুবাইরুল হক।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সেনা সদস্য মনিরুজ্জামান বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে সত্তর শতক জমি ভোগ দখল করে আসছি। কিন্তু শ্রমিক দল নেতা, বিভিন্ন মামলার আসামি জুবাইরুল হক তার দলবল নিয়ে আমন রোয়া উপড়ে ফেলে জমিটি দখল করে নেয়।
তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে চকরিয়া থানা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
ভুক্তভোগীরা জানান- এই বিএনপি নেতা শুধু মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামানেরই জমিই দখল করেনি, এধরনের অনেক নিরীহ মানুষের জমি দখল করেছে নি:স্ব করেছে অনেককে।
সম্প্রতি ওই জুবাইরুল সন্ত্রাসীদের নিয়ে কালাসিকদার পাড়া ৩নং ওয়ার্ডের হেলাল উদ্দীনের বসতজমি দখল, বাড়ি ভাঙচুর ও গোলা ভরা ধান, মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ নিয়ে আদালতে মামলাও করেছেন এই ভুক্তভোগী হেলাল উদ্দিন। মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডি কক্সবাজারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। মুক্তিযোদ্ধারা জাতির ক্রান্তিকালে যেভাবে আমাদেরকে সহযোগিতা করেছেন, তার ব্যক্তি বা পারিবারিক জীবনে কোনো অসুবিধা না হয় সে দিকে আমাদের সহযোগিতা থাকবে। এব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড