• রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ভাইয়ের ইটের আঘাতে ঝরল বোনের প্রাণ 

  নাজির আহমেদ আল-আমিন, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ)

২৩ জুলাই ২০২৩, ১৭:০৫
ভাইয়ের ইটের আঘাতে ঝরল বোনের প্রাণ 
উদ্ধারকৃত মরদেহ (ফাইল ছবি)

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সম্পত্তির ভাগ ও নেশার টাকার জের ধরে বড় ভাই বাবুলের ইটের আঘাতে ছোট বোন সোমাকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (২৩ জুলাই) উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আয়েশা ও অভিযুক্ত বাবুল উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের মোতালিব মিয়া ও আয়েশা বেগমের সন্তান।

এ ঘটনায় রাতেই শিবপুর এলাকা থেকে অভিযুক্ত বাবুল মিয়াকে আটক করেছে ভৈরব থানা পুলিশ।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গেল শনিবার বিকাল ৪টায় বাবুল মিয়ার তার মায়ের সঙ্গে সম্পত্তির ভাগ ও নেশার টাকা নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। বাকবিতণ্ডার এক ফাঁকে মা আয়েশা বেগমের শরীরে বাবুল মিয়া আঘাত করলে তার ভাইকে বাধা দেয় বোন সোমা বেগম। কেন বাধা দিলেন রাগে ক্ষোভে বোনকে ইট দিয়ে আঘাত করে বাবুল।

পরে স্থানীয়রা ছুটে আসলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় বাবুল। আহত অবস্থায় সোমাকে শিবপুর রেল গেইট এলাকায় পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। পরে রাত ১০টায় অবস্থা অবনতি হলে প্রথমে পৌর শহরের স্টেডিয়াম পাড়া সাজেদা আলাল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে প্রেরণ করেন। স্বজনরা সোমাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করান।

এ বিষয়ে নিহতের খালা শেফালী বেগম জানান, দীর্ঘ ২ বছর আগে বাবুলকে বাড়ি থেকে বের করে দেন বাবা-মা। একাধিক চুরির অভিযোগ রয়েছে বাবুলের বিরুদ্ধে। বাবুল একজন মাদকসেবী। সে নেশার টাকা না দেয়ায় মাঝে মধ্যে মায়ের কাছে এসে মাকে মেরে ফেলার হুমকি দিত। নেশার টাকা দেয়ার জন্য বলতো ও সম্পত্তির ভাগ চাইতো প্রায় সময়। কারণ বাবুল পরিবার নিয়ে শিবপুর রেল গেইট এলাকায় বাসা ভাড়া করে থাকে।

ঘটনার দিন বিকাল ৪টায় বাবুল মাকে নেশার টাকা ও সম্পত্তির জন্য চাপ দেয়, এক পর্যায়ে মাকে মারধোর করে। পরে বোন সোমা বেগম বাধা দিলে সোমাকে ইট দিয়ে মাথায় একাধিকবার আঘাত করে। প্রতিবেশীরা ছুটে আসলে বাবুল পালিয়ে যায়। স্বজনরা সোমাকে স্থানীয় একটি ফার্মেসীতে চিকিৎসা নেন। বাড়িতে এসে সোমা বমি করে। পরে অবস্থার অবনতি হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমা মৃত্যুবরণ করে।

তিনি আরও জানান, সোমা ঘটনার দিন সকালে শ্বশুর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। বিকালে সোমা তার শ্বশুরবাড়ি কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতি ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর এলাকায় চলে যাওয়ার কথা ছিল। সোমা লক্ষ্মীপুর এলাকার শাহীন মিয়ার স্ত্রী। নিহত সোমার তিন বছর ও সাত বছরে দুইজন ছেলে সন্তান রয়েছে।

ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. বিনীতা দাস জানান, রাতে সোমা বেগমকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্বজনরা। ভর্তির সময় সোমার অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। আসার সাথে সাথে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। কিছু সময় পরে সোমা মৃত্যু বরণ করে। বিকাল ৪টার ঘটনায় রাত সাড়ে ১০টায় হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসে স্বজনরা। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- রোগীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাকে মাথায় আঘাত করা হয়েছে।

ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনার প্রকৃত কারণ এখনো জানা যায়নি। অভিযুক্ত বাবুলকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রকৃত কারণ জানা যাবে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড