• রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

দুর্গম চরাঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারের জন্য সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ চার

শর্টগানসহ দুইজন গ্রেফতার 

  মনিরুজ্জামান, নরসিংদী

২১ জুলাই ২০২৩, ১৩:১৫
দুর্গম চরাঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারের জন্য সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ চার

এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নরসিংদীর দুর্গম চরাঞ্চল আলোকবালীতে দুই দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষ হয়েছে। এতে চারজন গুলিবিদ্ধসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় তাদের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে সদর উপজেলার মেঘনা নদী বেষ্টিত চরাঞ্চল আলোকবালী ইউনিয়নের খোদাদিলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের জেলা হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শর্টগানসহ নাজমুল ইসলাম (২০) ও আল-আমিন (৩০) নামে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এ দিকে এলাকার নিয়ন্ত্রণ হাতে নিতে পাঁচ লাখ টাকা চুক্তির ভিত্তিতে পার্শ্ববর্তী নিলক্ষ্যা এলাকা থেকে অস্ত্রসহ তিনজন সন্ত্রাসীকে ভাড়া করে আনা হয়। পরে গ্রামবাসীর হাতে আটক হওয়ার পর অস্ত্রধারী নাজমুল এ কথা স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত অস্ত্রধারীর এই বক্তব্য ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পরে। ফলে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

গুলিবিদ্ধ আহতরা হলেন- আল আমিন (৩০), নাহিদ সরকার (২২), সাকিব সরকার (২৪), শফিউল্লাহ (৩৫)। টেঁটাবিদ্ধসহ আহতরা হলেন- হালিম মিয়া (৫০), হারুন মিয়া (২০), মাসুদ রানা (২৪), নাজমুল ইসলামসহ (২০) অজ্ঞাত নামা আরও দুইজন। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ আলামিনকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। তারা সবাই আলোকবালীর খোদাদিলা গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সদর উপজেলার মেঘনা নদী বেষ্টিত চরাঞ্চল আলোকবালী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বজলুর রহমান ফাহিম ও যুবলীগের নেতা জাকির হোসেনের সাথে একই ইউনিয়নের ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক জয়নাল আবেদিনের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এরই জের ধরে উভয় গ্রুপের মধ্যে মামলা পাল্টা মামলা হয়েছে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুবলীগ নেতা জাকির হোসেন এলাকা ছাড়া হয়ে পড়ে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ভোর রাতে জাকির হোসেন ও ফাহিম এর সমর্থকরা বাঁশগাড়ি ও নিলক্ষ্যা থেকে লোকজন নিয়ে এলাকায় ঢুকে। এ খবর জয়নাল আবেদিন গ্রুপের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তারা তাদের প্রতিহত করে। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও গুলাগুলির ঘটনা ঘটে।

এ সময় প্রতিপক্ষের ছোড়া গুলিতে আলামিনসহ চারজন গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের কমবেশি ১০ জন আহত হয়েছে। পরে গুলিবিদ্ধ ও আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে প্রেরণ করে। এ দিকে খবর পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

শর্টগানসহ গ্রামবাসীর হাতে আটক পার্শ্ববর্তী নিলক্ষ্যা গ্রামের নাজমুল ইসলাম বলেন, পাঁচ লাখ টাকা চুক্তির ভিত্তিতে আমরা অস্ত্রসহ তিনজন লোক নিলক্ষ্যা গ্রাম থেকে জাকিরের দলকে জিতিয়ে দেওয়ার শর্তে এখানে এসেছি।

এক পক্ষের নেতা জয়নাল আবেদিন বলেন, মামলায় আসামি হয়ে জাকির এলাকা ছাড়া। হঠাৎ ফজরের নামাজের পরপর জাকির ও ফাহিমের নেতৃত্বে বাঁশগাড়ি ও নিলক্ষ্যার অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের নিয়ে এলাকায় ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ শুরু করেন। পরে গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে ঘেরাও দিয়ে অস্ত্র সহ নাজমুল নামে একজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। প্রতিপক্ষের বাড়ি ঘরে হামলার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

এ বিষয়ে অপর পক্ষের নেতা জাকির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গতকাল আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ ছিল। সেখানে আমাদের লোকজন যাওয়ায় জয়নাল ও তার ভাইয়েরা আমাদের লোকজনকে মারধর করে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে জয়নাল লোকজন নিয়ে আমার ও আমার সমর্থকদের বাড়ি ঘরের উপর হামলা চালায়। পাঁচ লাখ টাকায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ভাড়া আনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এগুলো আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ। এসব সঠিক নয়।

নরসিংদী সদর থানার উপ-পরিদর্শক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। শর্টগানসহ দুইজনকে আটক করা হয়েছে। এখন এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড