• রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

দীর্ঘ চেষ্টার পর ধরা পড়ল আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের তিন সদস্য

  সালাহ উদ্দিন আকাশ, উখিয়া (কক্সবাজার)

২১ জুলাই ২০২৩, ১২:২২
দীর্ঘ চেষ্টার পর ধরা পড়ল আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের তিন সদস্য
সদ্য ধরা পড়া আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের সদস্যরা (ছবি : অধিকার)

মানবপাচারের কাছে জিম্মি হয়ে উঠেছে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের সাধারণ মানুষ। স্থানীয়দের পাশাপাশি ক্যাম্পের রোহিঙ্গারাও মানবপাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়ছে নিয়মিত। শুধু পুরুষরা নয়, চক্রের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না নারী ও শিশুরা।

বিভিন্ন সময়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অভিযানে এই চক্রের কিছু সদস্য আটক হলেও চক্রের গডফাদাররা সবসময় আড়ালে থেকে যায়। তাতে উখিয়া ও টেকনাফ মানবপাচারের এক আতঙ্কের জনপদে পরিণত হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৫ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সময়ে টেকনাফ উপকূল দিয়ে সাগর পথে ট্রলারে করে মালয়েশিয়ায় মানবপাচার হতো জোরেশোরে। পাচারের শিকার লোকজন মালয়েশিয়া পৌঁছালে তাদের মারধর করে পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করে ছেড়ে দিতেন পাচারকারীরা।

পরবর্তীকালে পাচারের শিকার লোকজন অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করে সেখানে বিভিন্ন কাজে জড়াতেন। ওই সময়ে সাগর পথে মানবপাচারে মৃত্যু-ঝুঁকি বাড়ায় প্রশাসনের শক্ত অবস্থানে মানবপাচার বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০২০ সালের দিকে এই রুটে ফের মানবপাচার সক্রিয় হয়ে উঠে। তবে পুরনো এবং নতুন পাচারকারীদের সমন্বয়ে গঠিত মানবপাচারের চক্রটি এখন আগের চেয়ে বেশি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া ভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যরা বাংলাদেশেও সক্রিয় রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে এ চক্রের তিন সদস্য ৮ এপিবিএনের হাতে আটক হলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়।

এপিবিএন এর কাছে তারা স্বীকার করেছে দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও স্থানীয়দের মিয়ানমার এবং মালয়েশিয়ায় পাচার করে আসছে তারা। প্রতিটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এই চক্রের সদস্যরা কাজ করছেন বলে জানান তারা।

উখিয়াস্থ ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপস্ অ্যান্ড মিডিয়া) মো. ফারুক আহমেদ জানান, গত ৮ জুলাই উখিয়া ১৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে কেফায়েত উল্লাহ (২৪) ও হামিদ হোসেন (২৫) নামে দুই ব্যক্তিকে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে টেকনাফের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় মানবপাচারকারীরা।

পরবর্তী সময়ে সেখান থেকে হামিদ হোসেন কৌশলে পালিয়ে আসলেও কেফায়েত উল্লাহকে পাঠিয়ে দেয়া হয় মিয়ানমারস্থ পাচারকারীদের কাছে। সেখানে তাকে আটক করে মারধর করে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পরিবারের কাছে মোটা অঙ্কও দাবি করেন।

বিষয়টি জানার পর এপিবিএনের একাধিক টিম উখিয়া ও টেকনাফের সম্ভাব্য স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে পাচারকারী চক্রের তিন সদস্য কলিম উল্লাহ, এনাম উল্লাহ ও তারিকুল ইসলামকে আটক করতে সক্ষম হয়। পরে এই চক্রের হাতে অপহরণ পরবর্তী মিয়ানমারে পাচার হওয়া কেফায়েত উল্লাহকে কৌশলে মিয়ানমার থেকে আনানো হয়েছে।

আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। অপরাধ চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলমান আছে। গ্রেফতারকৃত কলিম উল্লাহর নামে ইতোপূর্বে হত্যা, অস্ত্রসহ ৪টি মামলা রয়েছে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড