মাজেদুল ইসলাম হৃদয়, ঠাকুরগাঁও
ফুটবল খেলায় অতিথি না করায় ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে প্রীতি ফুটবল খেলা বন্ধ করার অভিযোগ উঠেছে দুওসুও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সোহেল রানার বিরুদ্ধে। খেলা বন্ধ করতে গিয়ে ঘণ্টাব্যাপী চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন খেলা আয়োজক কমিটি ও বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। পরে থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
গতকাল মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বিকালে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের দুওসুও উচ্চ বিদ্যালয়ে অবরুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, দুওসুও ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে যুব সমাজের আয়োজনে প্রতি বছর ইদের পরে ফুটবল প্রীতি ম্যাচের আয়োজন করা হয় দুওসুও উচ্চবিদ্যালয় মাঠে। সেখানে বিবাহিত বনাম অবিবাহিত স্থানীয় খেলোয়াড়রা অংশ নেন। এই ধারাবাহিকতায় আজ খেলার আয়োজন করা হয়। যেখানে প্রধান অতিথি করা হয় স্বাধীন সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ রায়হান দুলুকে। খেলা শুরুর ১০ মিনিট পরে গ্রাম-পুলিশ নিয়ে খেলা বন্ধ করতে গিয়ে ঘণ্টাব্যাপী চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন খেলা আয়োজক কমিটি ও বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। পরে থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। পুলিশের উপস্থিতিতে বেশ কয়েকবার চেয়ারম্যানের লোকজন ও এলাকাবাসীর উত্তেজনা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, এর আগেও ওয়াজ মাহফিল ও কয়েকটি অনুষ্ঠানে ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল রানাকে দাওয়াত করেছিলেন তারা। চেয়ারম্যান উপস্থিত না হওয়ায় এবার তারা দাওয়াত করেননি।
অবিবাহিত দলের খেলায় অংশ নেওয়া নুর আলম ও রাশেদ আলী অভিযোগ করে বলেন, ৩০০ টাকা করে চাঁদা দিয়ে আমরা খেলার আয়োজন করেছি। চেয়ারম্যানকে দাওয়াত না করার কারণে খেলা শুরুর ১০ মিনিট পর তিনি মাঠে গ্রাম-পুলিশ নিয়ে এসে খেলা বন্ধ করে দেন। অনুষ্ঠানের অতিথিদের তুলে দিয়ে স্টেজ ভাঙচুর করেন।
তিনি আরও বলেন, পরে খেলা দেখতে আসা এলাকার লোকজন চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। চেয়ারম্যানের লোকজনের সঙ্গে খেলোয়াড় ও এলাকার লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় নুর আলম ও রাশেদ আলী বলেন, অবরুদ্ধ হওয়ার পর চেয়ারম্যান মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও)। তাকে উদ্ধার করতে বালিয়াডাঙ্গী থানা-পুলিশ যায় দুওসুও উচ্চবিদ্যালয় মাঠে। সেখানে ঘণ্টা খানেক পর চেয়ারম্যানকে পুলিশ উদ্ধার করে।
উদ্ধারের পর দুওসুও ইউপির চেয়ারম্যান প্রভাষক সোহেল রানা বলেন, ইউএনও অফিস, থানা কিংবা ইউপিকে না জানিয়ে খেলার আয়োজন করে। যেহেতু ব্যাপক লোকজনের উপস্থিতি হবে। আইনশৃঙ্খলার একটা বিষয় রয়েছে। আমি এ জন্য মাঠে উপস্থিত হয়ে দুই দলের কাছে খেলোয়াড়দের তালিকা চাই। তালিকা না দিয়ে প্রধান অতিথি বলেন খেলা হবে। এরপরে সেখানে উপস্থিত কিছু মাদকাসক্ত লোকজনের প্ররোচনায় আমার ওপর আক্রমণ করার চেষ্টা করে। বিষয়টি ইউএনওকে জানালে তিনি পুলিশ পাঠান। তারা আমাকে উদ্ধার করে। এই ঘটনায় তিনি ইউপি সদস্যদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেবেন।
তবে খেলার প্রধান অতিথি স্বাধীন সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ রায়হান দুলু বলেন, খেলা শুরু হয়ে গিয়েছিল। এরপর চেয়ারম্যান গিয়ে খেলা বন্ধ করে দিয়ে খেলোয়াড়দের তালিকা চান। এ সময় স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে যায়। আমি এক আত্মীয়র জানাজায় অংশ নেওয়ার জন্য ঘটনাস্থল থেকে চলে আসি। পরে আমি গিয়ে সহযোগিতা করে তাকে উদ্ধার করেছি। চেয়ারম্যানের অভিযোগ মিথ্যা, এর কোনো ভিত্তি নেই।
বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল আনাম বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড