হুমায়ুন কবির সূর্য, কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামে সবকটি নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। আজ শুক্রবার দুপুরে দুধকুমার নদীর পানি ৫২ সেন্টিমিটার ও ধরলা নদীর পানি ১৭ সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাড়ছে তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি।
দুধকুমার নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির ফলে দুধকুমার রক্ষা বাঁধের ৬শ’ মিটার ভেঙে গিয়ে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গত ৩/৪দিন ধরে বন্যায় প্লাবিতরা মানবেতর জীবন-যাপন করছে। বাড়ীর ভিতরে পানি ওঠায় তারা ঠিকমতো রান্নাবান্না করতে পারছে না।
স্যানিটেশন ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগছে বন্যা কবলিত এসব পরিবার।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যার্তদের তালিকা করা হচ্ছে। এছাড়াও বন্যা কবলিত ৮ শতাধিক পরিবারে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
নাগেশ্বরী উপজেলার নুনখাওয়া ইউনিয়নের চর কাফনা গ্রামের নুর বখত জানান, গতকাল থেকে পানির তোড় বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। নিচু এলাকার বাড়িঘরে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। লোকজন গবাদিপশু নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।
এই গ্রামের গৃহবধূ নাজমা জানান, চারদিকে পানি থাকায় ঠিকমতো রান্নাবান্না করতে পারছি না। ছেলেমেয়েদের ভালোমন্দ কিছু খাওয়াতে পারছি না।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়নের তথ্য মতে- শুক্রবার দুপুর ৩টার রিডিং অনুযায়ী দুধকুমার নদী ৫৪ সে. মিটার, ধরলা নদী ২১ সে. মিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে তিস্তা নদীর পানি ব্রিজ পয়েন্টে ২০ সে. মিটার এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারীতে ৩৪ সে. মিটার বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যেভাবে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে এসব নদীর পানিও বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।
এ দিকে দুধকুমার নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির ফলে দুধকুমার নদী তীরবর্তী পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি সংস্কারকৃত রাস্তার দু’দিক তলিয়ে গিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। বন্যা পরিস্থিতির কারণে ১০ হাজার মানুষ কবলিত হয়েছে বলে জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এই পানি বৃদ্ধির অবস্থা ৩ থেকে ৪ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। তারপর পানি নেমে যাবে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন বাঁধ বন্যায় ডুবে যায়নি বলে নিশ্চিত করে তিনি জানান, নাগেশ্বরী উপজেলায় একটি সড়ক সংস্কারের কাজ করেছে পাউবো। সেটির দুটি অংশ প্লাবিত হয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, ইতিমধ্যে ৬৫ মে.টন চাল উপজেলাগুলোতে উপ-বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও আমাদের কাছে ৫৮৫ মে.টন চাল, ১০ লক্ষ টাকা ও এক হাজার ৭শ’ প্যাকেট শুকনো খাবার মজুদ রয়েছে। আমরা বন্যার্তদের তালিকা করছি, তালিকা পেলে উপ-বরাদ্দ দেয়া হবে। শুক্রবার বিভিন্ন বন্যা এলাকা পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসক ৮শ’ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড