• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে ঘুষ নিয়ে শাস্তি পেলেন প্রধান শিক্ষক

  কাজী শাহরিয়ার রুবেল, আমতলী (বরগুনা)

১৩ জুলাই ২০২৩, ১৬:৪৬
স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে ঘুষ নিয়ে শাস্তি পেলেন প্রধান শিক্ষক
ঘুষ গ্রহণ (ছবি : প্রতীকী)

বরগুনার আমতলী উপজেলায় ঘুষের অভিযোগে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে (ভারপ্রাপ্ত) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম আনোয়ার হোসেন। তিনি হালিমা খাতুন নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।

ঘটনার সূত্র মতে, উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের আ. হক জোমাদ্দারের পুত্র রিয়াজ জোমাদ্দারকে পিয়ন পদে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ৪ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ঘুষ নেন। যা ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে লিখিত চুক্তি অনুযায়ী হয়েছিলো। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসের ১১ তারিখ চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করে ঘুষের টাকা নিলেও পিয়ন পদে চাকরি দিতে বিলম্ব হয়।

দীর্ঘ সময় পরে রিয়াজ জোমাদ্দার তার দেওয়া ঘুষের টাকা ফেরত দাবি করে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার মীমাংসার চেষ্টা করেও টাকা ফেরত পাননি রিয়াজ জোমাদ্দার। এক পর্যায়ে তিনি গুলিশাখালী ইউপি চেয়ারম্যান এবং উক্ত বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি অ্যাড. এইচ এম মনিরুল ইসলামের চলতি বছরের এপ্রিল মাসের ১৪ তারিখ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগ আমলে নিয়ে পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আনোয়ার হোসেন চাকরির প্রলোভনে ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি সত্য বলে বিবেচিত হয়। পরিচালনা পরিষদের সভাপতি প্রতিবেদন পেয়ে গত ১০ জুলাই সভা ডাকেন। সভায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকে ঘুষের টাকা ফেরত দিতে পরামর্শ দেন।

কিন্তু প্রধান শিক্ষক টাকা ফেরত দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরবর্তীকালে আয়োজিত সভার রেজুলেশন অনুযায়ী অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয় বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ।

ভুক্তভোগী রিয়াজ জোমাদ্দার জানান, চাকরির প্রলোভনে পড়ে আমি প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আনোয়ার হোসেনকে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে ঘুষ নেওয়ার শর্তে ৪ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা দেই। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও সে আমাকে চাকরি দিচ্ছে না। এক পর্যায়ে স্বাক্ষর করে ঘুষ নেওয়ার টাকাও ফেরত দিবে না বলে জানায়। তাই আমি বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতির নিকট লিখিত অভিযোগ করি।

তদন্ত কমিটির আহবায়ক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, চাকুরি দেওয়ার কথা বলে রিয়াজ জোমাদ্দারের নিকট থেকে ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রিয়াজ জোমাদ্দারের কাছ থেকে আমি অর্থ নেইনি। তবে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরের বিষয়ে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেননি। তবে তিনি অভিযোগ করেন বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভায় তাকে লাঞ্ছিত করে। তাছাড়া শুনেছি অনুষ্ঠিত সভার রেজুলেশনে আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি এবং গুলিশাখালী ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাড. এইচ এম মনিরুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আনোয়ার হোসেন চাকরির প্রলোভনে রিয়াজ জোমাদ্দার নামক একজনের কাছ থেকে ৪ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা, পারভেজ খান নামক একজনের কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকাসহ একাধিক জনের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন। যার সত্যতা তদন্ত প্রতিবেদনে পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক নিজের ঘুষের কলঙ্ক ধামাচাপা দিতে তাকে লাঞ্ছিত করার মিথ্যা আশ্রয় নিয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জিয়াউল হক মিলন বলেন, হালিমা খাতুন নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) বিরুদ্ধে চাকুরির প্রলোভনে ঘুষ নেওয়ার কথা মৌখিকভাবে শুনেছি। এখনো কোনো প্রকার অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে সত্যতা সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড